শহীদ মিনারের চারপাশের রাস্তা-ফুটপাত হকারদের দখলে

20
শহীদ মিনারের চারপাশের রাস্তা-ফুটপাত হকারদের দখলে

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

নারায়ণগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত চাষাড়া এলাকায় শহীদ মিনারের আশেপাশের সড়ক-ফুটপাত দখল করে তীব্র ভোগান্তির সৃষ্টি করছে কতিপয় পাতি নেতারা। হকারদের কাছে এসব সড়ক-ফুটপাত ভাড়া দিয়ে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। তবে অবৈধ এসব দোকানপাটের কারণে সড়কটি অত্যন্ত সরু হয়ে যায়, ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় জনসাধারণকে।

জানা গেছে, নগরীতে যানজট এখন নিত্যদিনের বিষয়। বিশেষ করে চাষাড়া এলাকায় যানজটের পরিমাণ সবসময়ই একটু বেশী থাকে। তাই বঙ্গবন্ধু সড়কের নিতাইগঞ্জ থেকে চাষাড়া পর্যন্ত আসতে গেলে প্রেসক্লাব হয়ে শহীদ মিনারের পেছনের সড়কটি চাষাড়ায় যাতায়াতের বিকল্প সড়ক হিসাবে পরিচিত। তবে এ সড়কটিও এখন হকারদের দখলে।

এদিকে, নগরীর প্রাণকেন্দ্র হওয়ায় সবসময়ই প্রচুর লোক সমাগম ঘটে চাষাড়ায়। মার্কেট, ক্লিনিক, ডায়াগনোস্টিক সেন্টারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সকল চাহিদা মেটাতে চাষাড়ায় প্রত্যেককেই আসতে হয়। এজন্য এ সড়কটি ব্যবহার করেন অনেকে। তবে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় কিছু পাতি নেতারা এ সড়ক ও ফুটপাত দখল করে ভাড়া দিচ্ছে হকারদের কাছে। ভাড়া নিয়ে ফাস্টফুড ও চায়ের দোকান বসিয়ে দিব্যি ব্যবসা করছে হকাররা।

জানা যায়, বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার উচ্ছেদে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী, জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ ও পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল। পুলিশ সুপারের নির্দেশে হকার উচ্ছেদে শহরের সামনের দিক তথা বঙ্গবন্ধু সড়কে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ।

তবে, মূল সড়ক থেকে কিছুটা ভেতরের দিকে হওয়ায় শহীদ মিনারের পিছনের এ সড়কটিতে নমনীয়তা দেখায় প্রশাসন, দাবী নগরবাসীর। তাদের মতে, সড়কটিতে মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করলেও ২/১দিন পরই তা শিথীল হয়ে যায় এবং আবারও রাস্তা-ফুটপাত দখল করে হকাররা। ফলে পুরোনো চেহারায় ফিরে যায় সড়কটি এবং তীব্র ভোগান্তি ও যানজট সহ্য করতে হয় সাধারণ জনগনকে।

আরও জানা গেছে, স্থানীয় কিছু চাঁদাবাজ ও পাতি নেতাদের কাছে আয়ের বড় উৎস এ সড়কটি। ৫-৬ ফুট হিসাবে একেকটি দোকান বসিয়ে ১ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত সালামি নেয় ঐ পাতি নেতারা। একইসাথে প্রতিমাসে ভাড়া বাবদ নেয়া হয় ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। ফলে গুটি কয়েকজন মানুষ অবৈধ এ অর্থ হাতিয়ে নিলেও মূলত দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহীদ মিনারের সামনে-পিছনে মূল রাস্তা-ফুটপাত হকারদের দখলে। প্রান্তিক পাম্পের সামনে থেকে শুরু করে শহীদ মিনারের সামনে ও পিছনের দিকে পাবলিক টয়লেট পর্যন্ত সড়কের দুপাশে প্রায় ৫০-৬০টি চা দোকান ও ফাস্টফুড দোকান বসানো হয়েছে। প্রত্যেক দোকানদার আবার ক্রেতাদের জন্য চেয়ার বসিয়েছে রাস্তায়। ফলে চলাচলের কোনো রাস্তা না থাকায় ক্ষোভ নিয়ে পথ চলতে হচ্ছে পথচারীদের। সড়কটির তিন ভাগের দুই ভাগই হকারদের দখলে। ফলে একটি রিক্সা চলাচল করতে গেলেও পথচারীদের গায়ের সাথে লেগে গিয়ে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। তবে এসব দেখার যেন নেই কেউ।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিচুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) নাজমুল হাসান ও পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল কেউই কল রিসিভ করেননি।