বেপরোয়া অটোচালকদের হামলায় রক্তাক্ত ১০, অবরুদ্ধ নগর ভবন!

4
Oplus_131072

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে আজ সোমবার সকালে এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। অনুমোদনহীন অটোরিক্সা চালকরা সিটি কর্পোরেশনের ভবনে হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় সিটি কর্পোরেশনের যানজট নিরসন কর্মী জান্নাতুল নাঈম শাওন, সম্রাট, কামরুন নাহার শিমলাসহ প্রায় ১০ থেকে ১২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, হামলাকারীরা প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখে, যা নগরীতে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বিনা উস্কানিতে এই হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং যানজট নিরসনে নিয়োজিত ছাত্র প্রতিনিধিদের উপর তারা আক্রমণ করে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।”

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত মূলত অনুমোদনহীন অটোরিক্সা চলাচলকে কেন্দ্র করে। সিটি কর্পোরেশন দীর্ঘদিন ধরে নগরীর যানজট নিরসনের জন্য অবৈধ অটোরিক্সা চলাচল বন্ধের চেষ্টা করছে। এর জের ধরেই আজ সকালে একদল অনুমোদনহীন অটোরিক্সা চালক সংঘবদ্ধ হয়ে সিটি কর্পোরেশন ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে চালকরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করলেও কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে তারা অতর্কিতভাবে ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে এবং সেখানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর হামলা চালায়। হামলায় ইট-পাটকেল ও ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আহত ছাত্ররা জানায়, তারা বিভিন্ন দাবিতে মানববন্ধন করছিল এবং সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা তাদের সহযোগিতা করছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই অটোরিক্সা চালকরা তাদের উপর চড়াও হয় এবং এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে। তারা আরও জানায়, হামলাকারীদের হাতে ধারালো অস্ত্র দেখা গেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তোলে।

এই ঘটনা নারায়ণগঞ্জে অনুমোদনহীন অটোরিক্সা চালকদের বেপরোয়া আচরণের একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। এর আগেও বিভিন্ন সময় তাদের বিরুদ্ধে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। আজকের এই ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাধারণ মানুষ ও সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা এই হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এই ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

এই হামলার ঘটনা নগরীতে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত করেছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন উঠেছে, কবে নাগাদ এই অনুমোদনহীন অটোরিক্সা চালকদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে এবং নগরবাসী শান্তিতে বসবাস করতে পারবে?