১২ ঘণ্টায় স্ত্রী হত্যার আসামি পিবিআইয়ের জালে, তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

পারিবারিক কলহের জেরে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে

146

নারায়ণগঞ্জে স্ত্রী লাকী আক্তারকে (২৫) নৃশংসভাবে হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলায় ঘাতক স্বামী মো. শহীদুল ইসলাম ওরফে কসাই শিপনকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলা হাতে পাওয়ার মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে পিবিআইয়ের চৌকস অভিযানে ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ আদালত তার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মে ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর এলাকায় এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে। পারিবারিক কলহের জেরে শহীদুল তার স্ত্রী লাকী আক্তারকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘরের ভেতর লাশ রেখে তালা দিয়ে পালিয়ে যান। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বজন সানিয়া আক্তার বাদী হয়ে ২৪ মে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় এবং দ্রুত রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলা শুরু থেকেই ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং ২৪ মে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে। এরপরই পিবিআইয়ের একটি বিশেষ দল তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণ ও বিশ্বস্ত সোর্সের মাধ্যমে আসামির অবস্থান শনাক্ত করে। পিবিআই নিশ্চিত হয় যে, আসামি শহীদুল ইসলাম ডিএমপি ঢাকার কোতোয়ালি থানাধীন সদরঘাট এলাকা থেকে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে, পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার একটি চৌকস দল ২৪ মে রাত আনুমানিক ১১টা ৪০ মিনিটে সদরঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে শহীদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। অর্থাৎ, পিবিআই সক্রিয়ভাবে তদন্তে নামার মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামিকে আইনের আওতায় আনতে সমর্থ হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত শহীদুল ইসলাম স্ত্রী লাকী আক্তারকে হত্যার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন এবং পারিবারিক কলহের জেরে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন।

পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার জানান, “আমরা মামলাটি হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করি। আমাদের টিমের নিরলস পরিশ্রমে অত্যন্ত দ্রুততম সময়ে প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।” তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার আসামিকে রবিবার (২৫ মে) যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ সুপার আশা প্রকাশ করেন, “এই রিমান্ডকালীন সময়ে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের হয়ে আসবে।”

পিবিআইয়ের এই দ্রুত ও সফল অভিযানে নিহতের পরিবার এবং স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তারা পিবিআইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।