নারায়ণগঞ্জে মারকাযুল ফুরকান শিক্ষা পরিবারের পুরস্কার বিতরণ ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

নারায়ণগঞ্জ শহরের শিল্পকলা একাডেমীতে দিনব্যাপী জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে মারকাযুল ফুরকান শিক্ষা পরিবারের পুরস্কার বিতরণ ও অভিভাবক সমাবেশ। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এ আয়োজনে শিক্ষার্থীদের হাতে তাদের সাফল্যের স্মারক হিসেবে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।

প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হাফেজ মাওলানা মোশাররফ হোসাইন মাহমুদের সভাপতিত্বে এসময় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আব্দুল জব্বার, খেলাফত মজলিস কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সিরাজুল মামুন এবং এনসিপি জেলার মুখ্য সমন্বয়ক এডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন।

অতিথিদের বক্তব্য

জামায়াতে ইসলামীর মহানগর আমীর মাওলানা আব্দুল জব্বার বলেন, “মারকাযুল ফুরকান পরিবার এমন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা অনেকেরই অজানা ছিল। এ প্রচেষ্টা নারায়ণগঞ্জসহ দেশের জন্য বড় সম্পদ। তাই এর প্রচার আরও বাড়াতে হবে।” তিনি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানিয়ে এর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।

খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব সিরাজুল মামুন শিক্ষার্থীদের মেধা ও প্রতিভা দেখে প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “এ ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নৈতিকতা, আধ্যাত্মিকতা ও আধুনিক জ্ঞানে সমৃদ্ধ করতে বড় ভূমিকা রাখবে। তবে আমাদের অন্তরে অবশ্যই আল্লাহর ভয় থাকতে হবে। তাহলেই সমাজ থেকে সকল বৈষম্য দূর হবে।”

এনসিপি নেতা এডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “শিশুরা বাংলা, ইংরেজি ও আরবী ভাষায় যে দক্ষতা অর্জন করেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এজন্য মারকাযুল ফুরকান শিক্ষা পরিবারকে ধন্যবাদ জানাই।”

সভাপতির বক্তব্য

সভাপতির বক্তব্যে হাফেজ মাওলানা মোশাররফ হোসাইন মাহমুদ বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো—শিশুরা যাতে কোরআন-হাদিসের পাশাপাশি আধুনিক জ্ঞানেও দক্ষ হয়ে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন পেশায় অবদান রাখতে পারে। এজন্য আমরা বাংলা, ইংরেজি ও আরবী তিন ভার্সনের সমন্বয়ে ব্যতিক্রমী সিলেবাস চালু করেছি।”

তিনি আরও জানান—

• ২০১৫ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ২০০-এর বেশি হাফেজ তৈরি হয়েছে।

• এখানে দাখিল থেকে এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনার পাশাপাশি ইংরেজি বিভাগে ‘ও’ লেভেল পর্যন্ত শিক্ষা দেওয়া হয়।

• প্রতি বছর আন্তর্জাতিক সিরাত প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়।

• বর্তমানে ঢাকার মুগ্ধায় ৪টি শাখায় ১,০০০-এর বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে।

• ৮ মাস আগে নারায়ণগঞ্জে যাত্রা শুরু হয়, এখন পর্যন্ত আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী এখানে অধ্যয়নরত আছে।

• শীঘ্রই বনশ্রী, উত্তরা ও মিরপুরে নতুন শাখা চালু হবে।

• ২০৩১-৩২ সালের মধ্যে দেশের সব ৬৪ জেলায় শাখা খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।

সমাপনী

অনুষ্ঠানের শেষাংশে শিক্ষার্থীদের হাতে তাদের সাফল্যের স্মারক হিসেবে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। সমাবেশ শেষে অতিথি ও অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ধর্মীয় ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে এই উদ্যোগকে সময়োপযোগী বলে অভিহিত করেন।