ফতুল্লাকে নাসিকে অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে কি করলেন গিয়াস উদ্দিন ও ডিসি?

5

রফিকুল ইসলাম জীবন :ফতুল্লা থানার পাঁচটি ইউনিয়নকে নতুন করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আওতায় নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ¦ মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন। তিনি ৫ আগষ্টের পরিবর্তনের পরেই এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন। তিনি যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ফতুল্লার ইউনিয়নগুলিকে যাতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আওতাভূক্ত করা হয় এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ চান। কারন এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক রিপোর্ট দিলেই মন্ত্রনালয় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। তাই এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক কতটুকু করেছেন তা জানা যায়নি।

এ বিষয়ে গিয়াসউদ্দিন আরো আগেই বলেছেন, রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মাঝখানে এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর এলাকা এভাবে গ্রাম এলাকা হিসাবে থাকতে পারে না। কারন নারায়ণগঞ্জ শহরের চেয়েও বড় শহর এখন ফতুল্লা থানা এলাকা। দেশে অন্যতম শিল্প এলাকাও ফতুল্লা থানা এলাকা। তিনি বলেছেন, সেই বন্দর আর সিদ্ধিরগঞ্জের গ্রামাঞ্চল গুলি যদি সিটি করপোরেশনের আওতায় আসতে পারে তাহলে ফতুল্লা কেনো আসবে না? তাই শিগগিরই যাতে ফতুল্লা থানা এলাকা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আওতায় চলে আসে এ ব্যাপারে তিনি সর্ব শক্তি নিয়োগ করবেন। কিন্তু ৫ আগষ্টের পর তিন মাস অতিবাহিত হলেও এ বিষয়ে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনই বা কতটুকু করেছেন তাও কেউ জানে না।

প্রসঙ্গত, ফতুল্লা থানার আওতায় মোট পাঁচটি ইউনিয়ন রয়েছে। তাই এসব ইউনিয়ন এখনো গ্রামের মর্যাদা পাচ্ছে। যার ফলে তেমন কোনো উন্নয়ন বরাদ্দ পাচ্ছে না। দেশের সেই অজপাড়াগায়ের ইউনিয়নগুলি যে সকল সুবিধা ভোগ করছে ঠিক একই সুবিধা পাচ্ছে ফতুল্লার পাঁচটি ইউনিয়ন। যার ফলে এসব ইউনিয়নে কোনো উন্নয়নই হচ্ছে না। কারন ইউনিয়ন পরিষদের আইন অনুযায়ীই তেমন কোনো উন্নয়ন সুবিধা পাবে না ইউনিয়ন এলাকা। সকল ইউনিয়ন এলাকার উন্নয়নের দায়িত্বে রয়েছে এলজিইডি। আর এলজিইডির আইনে ১২ ফুটের বেশি প্রশস্ত কোনো রাস্তা করার নিয়ম নেই। তাই ফতুল্লার সব কয়টি ইউনিয়নের রাস্তার প্রশস্ততা সর্বোচ্চ বারো ফুট বা তারো নিচে। অথচ এটি একটি শিল্প এলাকা। এই এলাকার শত শত মিল কারখানাগুলির পন্য পরিবহন করতে ভারি যানবাহন চলাচল করতে হয়। ফলে এসব যানবহানের উপযোগী কোনো রাস্তা না থাকায় মিল কারখানাগুলিকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। তাই যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব এলাকাটি সিটি করপোরেশনের আওতায় নিয়ে উন্নয়ন করা জরুরী বলে মনে করেন ফতুল্লার সর্ব স্থরের সাধারন মানুষ।

এদিকে ফতুল্লা থানার বহু এলাকায় সারা বছরই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। যেমন এই মুহুর্তের এনায়েতনগর ইউনিয়নের মুসলিমনগর, ফতুল্লা ইউনিয়নের পাইলট স্কুল এবং কাশীপুর ইউনিয়নের গোয়ালবন্দ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া গোটা বর্ষাকাল জুড়ে ফতুল্লা থানার গোটা কুতুবপুর ইউনিয়ন, ফতুল্লা ইউনিয়ন এবং এনায়েতনগর ইউনিয়নের অংশ বিশেষ হাটু পানির নিচে ডুবে থাকে। তাই সিটি করপোরেশনের আওতায় নেয়া গেলে এই ভয়াবহ সমস্যাটি থেকে মুক্তি পাওয়া যেতো। ফলে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ফতুল্লার পাঁচটি ইউনিয়ন সিটি করপোরেশনের আওতায় নেয়ার দাবি জানাচ্ছে ফতুল্লার সর্ব স্থরের জনগন। তাই এ বিষয়ে গিয়াস উদ্দিন এবং জেলা প্রশাসক কি করলেন সেটা জানতে চাইছে ফতুল্লার মানুষ।

প্রসঙ্গত বিগত ষোল বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলে চরম অবহেলার শিকার হয়েছে ফতুল্লা। প্রয়াত কবরী ৫ বছর এবং শামীম ওসমান ১১ বছর সংসদ সদস্য হিসাবে থাকলেও তারা ফতুল্লার কোনো উন্নয়ন করেননি এবং ফতুল্লাকে সিটি করপোরেশনের আওতায় নেয়ার চেষ্ঠা করেননি। যার ফলে গুরুত্বপূণূ এই থানা এলাকাটি চরম ভাবে পরিকল্পিত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে।