রাসেল পার্কের রাস্তা-ফুটপাত দখল করেছে যারা!

168

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

নগরবাসীর বিনোদনের কথা চিন্তা করে নির্মিত শেখ শেখ রাসেল পার্কের চারপাশের হকার ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ করছে স্থানীয়রা। স্থানীয়দের মতে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সঠিক তদারকি না থাকায় পার্কের রাস্তা-ফুটপাত দখল করে ভাড়া দিচ্ছে কতিপয় স্থানীয় পান্ডারা।

জানা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব পান্ডারা ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে ভাড়া দিচ্ছে হকারদের কাছে। ভাড়া নিয়ে ফাস্টফুড, বিভিন্ন পণ্য ও খাদ্য দ্রব্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। এ কারণে পার্কের ফুটপাত দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারছেন না পথচারীরা। ফলে উদ্বোধনের আগেই সৌন্দর্য্য হারাতে বসেছে শেখ রাসেল পার্ক।

সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পার্কের চারপাশ হকারদের দখলে। চারুকলা ইন্সটিটিউটির গেইট অর্থ্যাৎ পার্কের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে শুক্কুর কারী মসজিদের সামনে, পাক্কারোডের মোড়, ২নং বাবুরাইলের মোড়, ১নং বাবুরাইলের মোড় হয়ে জিমখানায় পুরাতন মসজিদ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক টং দোকান রয়েছে।

আরও দেখা যায়, অবৈধভাবে পার্কের সামনের রাস্তা দখল করে এখানে বার্গার, চিকেন ফ্রাইসহ বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুড আইটেমের খাবার, চা, কফি, আইসক্রিম, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ পথচারীসহ লেকের পাড়ে হাটতে আসা মানুষদের।

শেখ রাসেল পার্কের ফুটপাত-রাস্তা দখলের কারণে স্বাচ্ছন্দ্যে হাটা-চলা করতে পারছেনা নারী-শিশুরা

এদিকে, বেশ কয়েকদিন অনুসন্ধানের পর স্থানীয় কয়েকজনের নাম পাওয়া যায় যারা মূলত রাসেল পার্কের রাস্তা দখল করে ভাড়ার টাকা নিজেদের পকেটে পুরছে, হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। কেউ কেউ আবার নিজেরাই টং দোকান বসিয়ে ব্যবসা করছে। এদের প্রায় সকলেই সরকারী দলের নাম বিক্রি করে এ রাস্তা দখল করেছে বলেও জানা গেছে।

এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হকার স্থানীয় বেশ কয়েকজনের নাম জানান যারা পার্কের সামনের অবৈধ এ দোকানগুলো বসিয়েছে। এরা হলেন, রিগেন, মিঠু, শান্ত, রিসাদ, রিয়াদ, পারভেজ, রসুল, রিফাত, ইফাত, সোহেল, তুরাগ, মাসুম, হায়ুল, বাবু, মান্নান, রাজীব, রাসেল, আরিফ, টিটু, পাপুল, কিরণ, অপু, মাশাহার, লিয়ন, হৃদয়, সম্রাট, দোলন, মিন্টু, জজ, মাসুম, হৃদয় (২), রানা, নজু।

অপরদিকে, স্থানীয় মুরুব্বীদের অভিযোগ, যারাই এ রাস্তা দখল করছে সবাই নিজেকে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর আপনজন হিসাবে পরিচয় দেয়। মূলত মেয়রের নানা বাড়ি এ এলাকায় হওয়ায় নামকা ওয়াস্তের অনেক স্বজন মেয়রের নাম বিক্রি করে এ দোকানপাট বসিয়েছে বলেও জানান তারা। এছাড়াও সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা ও মহানগর আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা এক নেতার অনুসারীরাও এতে জড়িত বলে জানান স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে নাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন বলেন, রাসেল পার্ক নিয়ে আমরা ভাবছি। শীঘ্রই উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

একই বিষয়ে নাসিকের ১৬নং ওয়ার্ড তথা স্থানীয় কাউন্সিলর রিয়াদ হাসান হকারদের পক্ষ নিয়ে বলেন, এইডা তো যখন ওপেনিং হবে তখন সব উইঠ্ঠা যাইবোগা সব। এগুলো করতাছে কারা তা তো আপনিও জানেন ভালোমতো। এটার মধ্যে তো আর আমাদের হাত নেই কোনো। কারা কারা খাচ্ছে সেটা আপনি আগে লিখেন পত্রিকায়।