
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
ব্যবসায়ীদের অন্যতম সংগঠন বিকেএমইএ’র সাবেক সহ-সভাপতি ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সহ-সভাপতি প্রয়াত সাব্বির আলম খন্দকারের মৃত্যুবার্ষিকীতে শোক র্যালি ও মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে নগরীর চাষাড়ায় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচী পালিত হয়। পরে মাসদাইর কবরস্থানে মরহুমের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হয় এবং মরহুমের রূহের মাগফেরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া করা হয়।

মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মরহুমের বড় ভাই, বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা এড. তৈমুর আলম খন্দকার, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এড. আবুল কালাম আজাদ বিশ^াস, বিএনপি নেতা এড. ভাসানী, এড. সামসুজ্জামানা খোকা, নুরুল হক চৌধুরী দিপু, মহানগর যুবদল নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফ, রানা মুজিব, রাশেদুর রহমান রাশু প্রমুখ।

মানববন্ধনে এড. তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, নারায়ণগঞ্জে যখন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তখন সেনাবাহিনী, পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসনসহ ৪২টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা একসাথে বসে সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার লক্ষে আলোচনায় বসে এবং সন্ত্রাসীদের নাম জানতে চান। কিন্তু কেউ কোনো মুখ খুলতে রাজী হন নি। তখন সেনাবাহিনীর লোকজন বিরক্ত হয়ে বলে আপনারা কেউ যখন কারো নাম বললেন না, তাহলে আমরা চলে গেলাম। তখন সাব্বির আলম খন্দকার বলেছিলো, আমার জানাযার শরিক হওয়ার আহবান জানিয়ে আমি সন্ত্রাসীদের নাম বলা শুরু করলাম। সে জানতো এরপর তার মৃত্যু অবধারিত।
তিনি বলেন, আজকে আমরা ক্ষমতায় নাই বলে বিকেএমইএ ও সাব্বির আলম খন্দকারকে ভুলে গেছে। অথচ সাব্বির কিন্তু ব্যবসায়ীদের স্বার্থেই সেদিন কথা বলেছিলো, সবসময় ব্যবসায়ীদের স্বার্থে, নারায়ণগঞ্জবাসীর স্বার্থেই কাজ করতো। আজকে পুলিশ বাহিনীর উচিত ছিলো আজকে আমাদের সহযোগিতা, ব্যবসায়ীদের উচিত ছিলো আমাদের সহযোগিতা করা। ব্যবসায়ী সংগঠন সহযোগিতা করে নাই, কারণ তারা মনে করে সাব্বির আলম খন্দকারের ভাইয়েরা ক্ষমতায় নাই। আর পুলিশ মনে করে, তাদের কাজ হলো সরকারি দলের প্রার্থীকে পাশ করে দেয়াই তাদের দায়িত্ব। পুলিশ আরও মনে করে, বিরোধী দলের কোনো প্রার্থী হলে তার ব্যাজ পড়া ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা, হয়রানি করা তাদের দায়িত্ব। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব না। তারা যদি দায়িত্বই মনে করতো, তাহলে এই মিছিল-মিটিংয়ে বাধা না দিয়ে তারা আমাদের সহযোগিতা করতো।

সবশেষে তিনি বলেন, যাই হোক আমাদের দাবি, ১৮ই ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় সন্ত্রাস দিবস ঘোষণা করা হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য, মাদক-সন্ত্রাসকে নির্মুল করার জন্য সাব্বির আলম যে আত্মহুতি দিয়ে গেছেন, তার রক্তে রঞ্জিত এই নারায়ণগঞ্জকে অবশ্যই আমাদের সন্ত্রাস মুক্ত করতে হবে এবং সন্ত্রাসমুক্ত হবে ইনশাআল্লাহ। নারায়ণগঞ্জ থেকে পতিতালয় উচ্ছেদ হয়েছে, কিন্তু পতিতালয়ের মালিকদের, যারা এই ব্যবসা করতো তাদের দাবড়ানি কমে নাই। এই পতিতালয়ের লোকেরাই সাব্বিরকে হত্যা করেছে। আজকে তাদেরকে বলে দিতে চাই, কোনো প্রকার দাবড়ানি এই নারায়ণগঞ্জের মানুষ সহ্য করবে না। অতীতেও করে নাই, ভবিষ্যতেও করবে না।
মানববন্ধন ও র্যালি শেষে মাসদাইর কবরস্থানে গিয়ে মরহুমের কবরে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হয় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে। একইসাথে মরহুমের রূহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।