
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
নগরীর বঙ্গবন্ধুর সড়কের হকার উচ্ছেদ করতে গিয়ে সিটি মেয়র আইভী ও সাংসদ শামীম ওসমানের মধ্যকার সংঘর্ষের খবর জানে পুরো দেশবাসী। সেদিন বর্বর হামলার শিকার হয়েছিলেন মেয়র। তবে এ সড়কের হকার উচ্ছেদে কঠোর আইভী, শেখ রাসেল পার্কের চারপাশের হকারদের উচ্ছেদে কেন নমনীয় সেই প্রশ্ন তুলেছে নগরবাসী।
নগরবাসীর মতে, জনগনের সুবিধার্থে প্রতিটি নগরীর ফুটপাত হকারমুক্ত করার দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের। অন্যান্য সড়কের হকার উচ্ছেদে এ নিয়ম পালন করতে দেখা গেলেও অজানা কারণে রাসেল পার্কের ক্ষেত্রে নিয়মটি শিথিল হয়ে যায়। লেক নির্মানের পর থেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘসময় ধরে সীমাহীন ভোগান্তি পোহালেও এক্ষেত্রে নিরব ভুমিকায় সিটি কর্পোরেশন যা বেশ সন্দেহজনক বলেও অভিমত তাদের।
এর কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন, নগরীর ১৬নং ওয়ার্ডের শেখ রাসেল পার্কের সম্মুখ দিকটা মূলত মেয়র আইভীর নানাবাড়ির এলাকা হিসাবে পরিচিত। নানা বাড়ির এলাকা হওয়ায় এদিকের হকার উচ্ছেদে নাসিক কর্তৃপক্ষ কিছুটা শিথিলতা দেখাচ্ছে বলেও মনে করেন তারা।
যদিও মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী অনুসারীদের দাবী, আইভী অনুসারীরা কখনোই ফুটপাতে দোকান বসায় নাই। বরং মেয়র আইভী বরাবরই হকার উচ্ছেদ, লুটপাট, দুর্নীতি সহ সকল অপরাধের বিষয়ে প্রতিবাদী কন্ঠস্বর। তবে, নামকা ওয়াস্তের কিছু স্বজন ও স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি এ কর্মকান্ডে জড়িত বলে দাবি তাদের।
এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পার্কের রাস্তা ও ফুটপাত দখলের যে তালিকা গতকাল প্রকাশিত হয়েছে তাদের মধ্যে কেউই প্রত্যক্ষভাবে মেয়রের ঘনিষ্ঠজন নয়। মূলত লেক ও পার্কের আশেপাশের বাড়িঘর ও ব্যবসা-বাণিজ্য থাকার কারণে এবং সিটি কর্পোরেশনের অনীহার কারণে দিন দিন অবৈধ এসব দোকানপাটের সংখ্যা বেড়েই চলছে। যার ফলে জনসাধারণের ভোগান্তিও বাড়ছে দিন দিন। তাছাড়া অবৈধ দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির টাকা ভাগাভাগির কারণে বেশ কয়েকবার দুটি গ্রুপের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।
আরও জানা গেছে, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুটি গ্রুপের মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন সাবেক একজন ছাত্রনেতা, যিনি বর্তমানে না:গঞ্জ আওয়ামীলীগের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দেন যুবলীগের এক নেতা জানান স্থানীয়রা। মোদ্দাকথায়, মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ লুফে নেয়ার লক্ষ্যে দুই নেতার অনুসারীদের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলা-মামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
তবে, নগরবাসীর মতে, সাধারণ জনগনের জন্য নির্মিত এই লেকে এসে সীমাহীন কষ্ট ও ভোগান্তির পোহাতে হয় নগরবাসীকে। তারপরেও এ সড়কটিতে কোনো উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয় না কেন এ প্রশ্ন এখন সকলের। পার্কের রাস্তা-ফুটপাত দখলের কারণে কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট যানজট ও গণমানুষের ভোগান্তি রোধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে নাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন কল রিসিভ করেন নি এবং নগর পরিকল্পনাবিদ মাইনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।