
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
নগরীর ১৬ নং ওয়ার্ডের দেওভোগ এলাকায় হাকিম মার্কেট নামে পুরাতন ভবনটি বেশ কয়েকবার ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করা হলেও নীচতলায় প্রায় ৮০টি দোকানে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এখনো ব্যবসা করছে ব্যবসায়ীরা। ভবনটি এতোটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে, ইতিমধ্যেই ভবনটির ২য়, ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম তলার ভাড়াটিয়াদের অন্যত্র সরানো হয়েছে। এছাড়া ভবনের প্রথম তলার ছাদ ভেঙ্গেছে অনেক আগেই, বর্তমানে ছাদের পরিবর্তে টিন দিয়ে বৃষ্টির পানি আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ইতিপূর্বে ভবনের মালিকপক্ষ ও মার্কেট কমিটির কর্তৃপক্ষরা ২০২০ সালের কোরবাণীর ঈদের পরে ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার কথা বললেও এখনো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন দোকানীরা।
এর আগে, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করে এটি ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলো নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স। স্থানীয়দের মতে, যেকোন মুহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে ভবনটিতে। এ নিয়ে দোকান মালিক সমিতি ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উতকণ্ঠা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবনের নীচ তলার ছাদ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে ছাদের স্থলে টিন দেয়া হয়েছে। ভবনের ভেতরে-বাইরে শ্যাওলা জমে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ এবং ছাদ চুয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে। বিদ্যুতের তারগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। কাজের কোনো পরিবেশ নেই। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় গত ৪ বছর আগে থেকেই উপর তালা গুলোর ভাড়াটিয়াদেরকে অন্যত্র সরানো হয়। ফলে উপর তালাগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকান মালিক জানান, ভবনটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। ইতিমধ্যেই সিটি কর্পোরেশন ও ফায়ার সার্ভিস এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ভেঙ্গে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছে। ভবন মালিকদের একাধিকার জানানো হয়েছে। মালিকপক্ষের উদাসীণতায় ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা যাচ্ছে না। ফলে আমরা চরম আতঙ্ক নিয়ে এখানে ব্যবসা করছি।
মার্কেটটির দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দরা শীতলক্ষ্যাকে জানান, আমরা ইতিমধ্যেই মালিকপক্ষের সাথে কয়েকদফা বৈঠক করেছি। দোকান মালিকদের পক্ষ থেকে আমরা ইতিমধ্যেই একটি আহবায়ক কমিটি করেছি যার প্রধান আহবায়ক হচ্ছেন ১৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মনা সরদার সাহেব। আহবায়ক কমিটির সদস্যদের নিয়ে মালিকপক্ষের সাথে বসে শেষ বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঈদের পরেই ভবনটি ভাঙ্গা হবে।
মনা সরদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা মালিক পক্ষকে অনেকবার বলেছি তারা কোনো কর্ণপাত করেনা। এমনকি সিটি কর্পোরেশন থেকে ঝুকিপূর্ণ হিসাবে ভবনটিকে চিহ্নিত করাও হয়েছে, তারপরেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয় না। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায়-দায়িত্ব কে নিবে এমন প্রশ্নে মনা সরদার পরিস্কার করে বলেন, এর দায়ভার মালিকপক্ষকেই নিতে হবে।
মালিকপক্ষ থেকে জানানো হয়, আসলে এ ভবনটির মালিক আমরা বেশ কয়েকজন। যাদের মধ্যে অনেকেই মারা গেছেন। তাই উত্তরাধিকার সুত্রে মালিক সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে ভবনটি সম্পর্কে সিদ্ধান্তে পৌছতে।
এদিকে ভবন মালিকদের একজন জনৈক আহসান হাবিব জানান, আসলে সকলেই পুরোনো ভাড়াটিয়া। ইতিমধ্যে তাদের সাথে দফায় দফায় আমাদের বৈঠক হয়েছে। তারা দোকানগুলো ছেড়ে দিলেই আমরা ভবনটি ভেঙ্গে পুন:নির্মাণের কাজ শুরু করবো। আশা করি খুব শীঘ্রই এ কাজ শুরু হবে।