
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
নারায়নগঞ্জ আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের কমিটিতে বেশ কয়েকজন নেতা একাধিক কমিটির নেতৃত্বে রয়েছে। এদের একেকজন দুটি কমিটির নেতৃত্বে বহাল রয়েছেন। অপরদিকে অনেক ত্যাগী ও মেধাবীরা পদ-বঞ্চিত হয়ে আছেন দীর্ঘ সময় ধরে। ফলে জেলা আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের মাত্র কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে চলছে। এ কারণে পদ বঞ্চিত নেতাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল। তবে তারা বলছেন, দল চাইলে যে কোনো সময় একটি পদ ছেড়ে দিতে প্রস্তত রয়েছে তারা।
সুত্রমতে, ২০০৫ সালে গঠিত হওয়া জেলা যুবলীগের সর্বশেষ কমিটিতে সভাপতির পদে আসীণ থাকা আব্দুল কাদির প্রায় ৩ বছর ধরে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হয়েছেন। তিনি এখনও জেলা যুবলীগ থেকে অব্যাহতি নেননি। তবে, এর আগে তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, তিনি জেলা যুবলীগের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন কিন্তু কেন্দ্র থাকে অব্যাহতি দেয়নি বলে দাবী আব্দুল কাদিরের। এদিকে, ১৬ বছর আগে গঠন হওয়া জেলা যুবলীগের সেই একই কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো: শহীদ বাদলও সাড়ে তিন বছরের বেশী সময় ধরে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হয়ে আছেন। কোনো কমিটি থেকেই তিনি নিজেকে সরিয়ে নেননি বলে জানা যায়।
এছাড়া যুবলীগের একই কমিটির সহ-সভাপতি জাকিরুল আলম হেলাল প্রায় ৫ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে, এ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজামও ৫ বছর ধরে আছেন মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক পদে। এছাড়াও ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল আলীও ৩ বছর ধরে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও আ.লীগের একাধিক নেতাকর্মী একাধিক অঙ্গসংগঠনের পদ বহন করছে বলে জানা যায়। যার কারনে দীর্ঘ সময় দল ক্ষমতায় থাকলেও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী হচ্ছে না বলে মনে করে অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
তৃণমূলের নেতাকর্মীদের দাবী, আওয়ামীলীগের মতো বড় একটি দলে সবসময় অনেক নেতাকর্মীরা পদ-পদবীর প্রত্যাশায় থাকে। এমন বড় একটি দলে এ ধরনের নেতারা একেকটি অঙ্গসংগঠনকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে বলে মনে করেন তারা। নেতাকর্মীদের মতে, একজন নেতা যদি একাধিক কমিটির নেতৃত্ব দিতে ব্যস্ত হয়ে পরেন তাহলে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হবে কিভাবে। একইসাথে নতুন নেতৃত্বের অভাবে আ.লীগের অঙ্গ-সংগঠনগুলোর কার্যক্রমেও কিছুটা ভাটা পড়ে বলে জানায় তারা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল মনে করে, নেতাদের একাধিক কমিটি থেকে সরে আসতে হবে এবং তরুনদের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে তাহলেই আ.লীগ ও এর সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সক্রিয় এবং শক্তিশালী হবে।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে দুই পদে আসীন থাকা মীর সোহেল বলেন, এটা তো দলের ব্যাপার। দল যখন চাইবে তখনই ছেড়ে দিবো। এখন অবশ্য ছেড়ে দেয়ার মতোই। এছাড়া দুই পদে থাকলে আমাদেরই লস। কেননা একসাথে দুই পদেরই কাজ করতে হয়।
একই বিষয়ে দুই পদের দায়িত্বে থাকা শাহ নিজাম বলেন, আসলে দলকে সুসংগঠিত করতে হলে যোগ্যদের মূল্যায়িত করা উচিত। অনেক বছর ধরে সম্মেলন হয়না বলেই আমরা আগের পদগুলোতে হয়তো আছি। একসময় আমরা যুবলীগ করেছি, বয়সের কারণে এবং রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কারণে আমরা এখন আওয়ামীলীগে এসেছি। তাই আমরাও চাই নতুনরা যাতে যোগ্যতার ভিত্তিতে যথাযথ পদে এসে দায়িত্ব পালন করে দলকে সুসংগঠতি করুক।
আমরা চাইলেই তো অনেক কিছু হয় না, কেন্দ্রীয় কমিটিগুলোর আরো বেশী তৎপর হওয়া জরুরী বলেও মনে করেন তিনি। কেননা ছাত্রলীগের আগের এবং বর্তমান কমিটিগুলোতে অনেক ত্যাগী ও দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ নেতাকর্মী আছে যারা এসকল পদগুলোতে আসীন হয়ে দলকে আরো সুসংগঠিত করতে পারবে। তাই আমরাও চাই যাতে সম্মেলনের মাধ্যমে এ সকল পদগুলোতে ত্যাগীদের মূল্যায়িত করা হয়।
একই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কল রিসিভ করেন আব্দুল কাদির, নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায় ভিপি বাদলের।