নগরীতে চলছে প্রেস-সাংবাদিক লেখা নম্বরপ্লেটবিহীন অসংখ্য মোটরসাইকেল

198
নগরীতে চলছে প্রেস-সাংবাদিক লেখা নম্বরপ্লেটবিহীন অসংখ্য মোটরসাইকেল

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রুখে দিতে সরকারের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশ জুড়ে চলছে কঠোর লকডাউন। আর এ লকডাউনে জরুরি কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। জরুরি কাজে বের হলেও লাগবে মুভমেন্ট পাস। তবে এ মুভমেন্ট পাস লাগবে না সাংবাদিকদের এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন পুলিশের আইজিপি বেনজির আহমেদ।

এ ঘোষণার পর থেকে নগরীতে প্রেস স্টিকার, সংবাদপত্র, সাংবাদিক লেখা স্টিকার সম্বলিত বাইক, মোটরবাইকের সংখ্যা বেড়েছে। আর এসব স্টিকার লাগানো বাইক, মোটরবাইকের অধিকাংশেরই নেই রেজিষ্ট্রেশন, বৈধ কাগজপত্র ও নম্বর প্লেট। তারপরও একটি স্টিকার লাগিয়েই লকডাউন উপেক্ষা করে ও সরকারী নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নগরীতে চলছে এমন অসংখ্য মোটর সাইকেল।

বিশ্লেষক মহলের মতে, এ ধরনের অবৈধ মোটর সাইকেলের কারণে একদিকে যেমনি ভাবে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, ঠিক তেমনি ভাবে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিরও সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ অধিকাংশ মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ধরনের স্টীকার ব্যবহার করে হরদম অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। পাশাপাশি সন্ত্রাসীরা নিজেদেরকে নিরাপদ রাখতে নম্বর বিহীন মোটর সাইকেল ব্যবহার করছে বলেও জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীতে চলমান শতশত মোটরসাইকেলের মধ্যে খুবই অল্প সংখ্যক মোটর সাইকেলের বৈধ কাগজপত্র, রেজিষ্ট্রেশন রয়েছে। অধিকাংশ মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেটের স্থানে ‘সাংবাদিক’ কিংবা ‘প্রেস’ লেখা স্টীকার, অনেকেই ‘জরুরি ডিশ (কেবল ব্যবসা)’, অনেকে আবার ‘বিদ্যুৎ’, কেউ কেউ ‘পুলিশ’, ‘সিটি কর্পোরেশন’ সহ নানা ধরনের স্টিকার লাগিয়ে নগরীতে চলাচল করছেন। ‘অন টেস্ট’ লিখে রেখেছে এমন মোটরসাইকেলের সংখ্যাও কম নয়। বিক্রয়কেন্দ্রের নাম লেখা নম্বর প্লেটও চোখে পড়ে বেশ। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের নামও।

আরও জানা গেছে, নগরীসহ জেলার বিভিন্ন স্থানের মোটর সাইকেলের চালকেরা এভাবে নিবন্ধন না করেই মাসের পর মাস ধরে চলাচল করছেন। আর নানা অপরাধ কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে এসব অনটেষ্ট মোটর সাইকেল। এদিকে এগুলো দেখেও নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানের সড়কে বের হলে প্রায়ই চোখে পড়ে রেজিষ্ট্রেশন বিহীন শত শত মোটর সাইকেল। সংবাদকর্মী বা গণমাধ্যকর্মী না হয়েও অনেকে প্রেস লিখে চালিয়ে যাচ্ছেন রেজিষ্ট্রেশন বিহীন এসব মোটর সাইকেল। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারী তাদের অফিসের নামও লিখে রেখেছেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে প্রতিনিয়ত যানবাহনের কাগজপত্র যাচাই করা হয়। এতে দেখা গেছে, অর্ধেকেরও বেশি মোটরসাইকেলের নিবন্ধন থাকে না। এমন অনেক মোটরসাইকেল রয়েছে, যেগুলো রেজিস্ট্রেশন না করেই বয়স শেষ হয়ে গেছে।

এক আইনজীবি বলেন, বিআরটিএ নিবন্ধন করা যানবাহনে কেউ তার পেশাগত পরিচয় লিখে সড়কে চলাচল করলে দোষের কিছু নেই। কিন্তু নিবন্ধন ছাড়া যানবাহনে পেশা ও ব্যক্তিপরিচয় লিখে সড়কে চলাচল করলে সেটি হবে অপরাধ।

অবশ্য একাধিক মোটরসাইকেল মালিক জানিয়েছে, তারা কষ্ট করে মোটরসাইকেল কেনার পর রেজিস্ট্রেশন করতে বিআরটিএ অফিস গেলে অতিরিক্ত টাকা চাওয়া হয়। এ ছাড়া কাগজপত্রের ত্রুটি দেখিয়ে চলে নানা হয়রানি, যে কারণে তারা রেজিস্ট্রেশন করার আগ্রহ হারিয়েছে।

একই বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টি আই) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে এবং প্রায়ই নম্বরপ্লেটবিহীন মোটরসাইকেল আটক করে মামলা দেয়া হচ্ছে।