দুই মেরুর দ্বন্দে শূন্য পদ শূন্যই রয়ে গেলো

89
আবদুল হাই, মেয়র আইভী, মুক্তিযোদ্ধা বাচ্চু, আব্দুল কাদির, আরজু ভুইয়া, ভিপি বাদল, জাহাঙ্গীর, ডা: বীরু, মীর সোহেল, আবু সুফিয়ান

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী জেলা, রাজনীতির সুতিকাগার হিসাবে পরিচিতি নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যকার দুই মেরুরু বিরোধ কোনোভাবেই কমানো সম্ভব হয় নি। আর এ দ্বন্দের কারণে চার মাস আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও জেলা আওয়ামীলীগের শূণ্য পদগুলোকে পূরণ করা সম্ভব হয়নি বলে মনে করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল।

জেলা কমিটির শূণ্য এসব পদ কবে নাগাদ পূরণ হচ্ছে তাও বলতে পারছেন না কেউই। তাছাড়া উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে বিভক্ত জেলার রাজনীতি। দুই মেরুর এ বিভক্তির কারণে নেতাকর্মীরাও সর্বদা বিভক্ত হয়ে রাজনীতি করে আসছে। এ অবস্থায় অনেকটা সমন্বয়হীনভাবে ঢিমেতালে চলছে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম।

জানা যায়, জেলা কমিটির সহ সভাপতি, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ১ জন করে ও ২ জন সদস্য পদসহ মোট ৬টি পদ শূণ্য রয়েছে। এছাড়া কমিটি ঘোষণার পূর্বেই সহ সভাপতি পদে থাকা খাজা রহমতউল্লাহর মৃত্যুতে আরো একটি পদ খালি হয়।

সাধারণ নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বর্তমান কমিটি অনুমোদন পাওয়ার সাড়ে তিন বছর পরেও ৬ শূণ্য পদ পূরণ তো দুরে থাক, চোখে লাগার মতো কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিলো না এ কমিটির। জেলার শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভাব ও দুই মেরুর দ্বন্দের কারণে গুরুত্বপূর্ণ এ ৬টি পদ পূরণ করা ছাড়াই দীর্ঘ সময় পার করেছ তারা। বর্তমান কমিটি অনুমোদন পাওয়ার পর একসাথে দাড়িয়ে কোনো অনুষ্ঠান বা কর্মসূচী পালন করতে পারে নি। ফলে অনেকটা হ-য-ব-র-ল অবস্থা জেলা আওয়ামী লীগে।

দলীয় সূত্রমতে, স্বাধীণতা পরবর্তী সময় থেকেই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ এ দুটি মেরুতে বিভক্ত। যার দক্ষিণে ওসমান পরিবার, উত্তরে চুনকা পরিবার নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। দলীয় হাইকমান্ড ২০১৬ সালের ৯ই অক্টোবর বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হাইকে সভাপতি, নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সহ-সভাপতি ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল ওরফে ভিপি বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা দেন। এর ১৩ মাস পর ২০১৭ সালের ২৫ শে নভেম্বর ৬টি পদ শূন্য রেখে ৭৪ সদস্যবিশিষ্ট জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। এতে নড়েচড়ে বসে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন হওয়ার পরও দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে যান কমিটির সদস্যরা। ফলে শূন্য ৬টি পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে দলীয় সভায় চরম হৈচৈ ও মত পার্থক্যের কারণে পদগুলো এখনো পূরণ করা সম্ভব হয়নি।

জেলা ও থানা পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতাদের মতে, টানা তৃতীয়বারের মতো দল ক্ষমতায়। অথচ দলের সাংগঠনিক অবস্থা বেহাল। মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে আছে উপজেলা ও থানা কমিটিগুলো। তাছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদও শেষ। কিন্তু মেয়াদকালের মধ্যে পূরণ হলো না শূণ্য থাকা ৬ পদ।

জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাইয়ের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে হলে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ্য বোধ করছেন বলে জানান।

একই বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আরজু ভুইয়া বলেন, আসলে দীর্ঘ সময় ধরে কভিড-১৯ এর প্রকোপ চলছে। রাজনৈতিক সকল কর্মকান্ড এখন অনেকটাই স্থবির অবস্থায় আছে, তাই এখন এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক তারপর দেখা যাবে।

জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী কল রিসিভ করেন নি, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেলের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।