অপপ্রচারকারীদের কঠিন জবাব দিলেন মুন্না ও তার সমর্থকরা

43

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

গত নির্বাচনে একটি পক্ষ কামরুল হাসান মুন্নার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জরুরী কাগজে স্বাক্ষর না করার অপপ্রচার চালিয়ে ওয়ার্ডবাসীকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানিয়েছিলো একটি কুচক্রিমহল, সম্প্রতি মুন্নার এক নির্বাচনী উঠান বৈঠকে এমন দাবী করে মুন্না সমর্থকরা। ঐ কুচক্রি মহলটি এবারও সেই অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে দাবী করেন তারা। তবে জনগন এবার সচেতন উল্লেখ করে মুন্না ও তার সমর্থকরা ঐসব অপপ্রচারকারীদের হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন এবং এসব অপপ্রচারের জবাব দেন।

মুন্না সমর্থক ও সাবেক সিডিসি নেত্রী সাহানা বেগম বলেন, ভাত খাইলে ভাত পড়ে এটাই স্বাভাবিক। অনেকেই বলে কাউন্সিলর থাকাকালীণ সময়ে মুন্না নাকি সই দেয় না। সইটা যে দেয় না, কেন দেয় না, কারে দেয় না এটা কখনো ভেবে দেখেছেন আপনারা। আপনাদের উদ্দেশ্যে বলছি, এই ওয়ার্ডে প্রায় ২৫-৩০ হাজার মানুষ আমরা বাস করি। কাউকেই কি সই দেয় না, নাকি যারা সইয়ের উপযুক্ত না, একটা যা তা কাগজ নিয়া গেলো তাকে কি সই দেয়া উচিৎ, এটা আপনারাই বলেন। মুন্না তো মূর্খ না, ও বুঝে কোন কাগজটার মধ্যে সই দিলে ভালো হবে এবং কোন কাগজটায় সই দিলে খারাপ হবে, বুঝে-শুনেই মুন্না সই দিচ্ছে। যে মুর্খ সে যে কোনো কাগজেই সই দিচ্ছে।

উদাহরণ দিতে গিয়ে এই নারী নেত্রী বলেন, গত নির্বাচনের পূর্বে ইসমাঈল নামে আমাদের ঘনিষ্ঠ এক লোক যে কিনা আদম ব্যবসা করতো, তিনি ডিসি সাহেবের সই নকল করে। তারপর তার নামে মামলা হইছে, পুলিশ-দারোগারা আসছে, তাকে ধরে নিয়ে যাবে। তখন মুন্নার কাছে এসেছে, মুন্না এই কথা শুনে তাকে ধমক দিয়েছে। ধমক দেয়ার কারণে মুন্না এখন ভালো না। এখন নাকি কবির ভালো।

এ অপপ্রচারের জবাবে মুন্না বলেন, আমি অনেক কষ্ট করে সিটি কর্পোরেশন থেকে আমাদের উদ্দেশ্যে প্রেরিত একটি চিঠি খুঁজে পেয়েছি, যাতে ছিলো পরিস্কার একটি নির্দেশনা। সেখানে, অধিকতর যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় নাগরিক কাগজগুলোতে সই করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো। তারপর থেকেই আমরা অধিকতর যাচাই-বাছাই করে স্বাক্ষর করি। যেসব কাগজপত্র ঠিক থাকতো এবং ওয়ারিশগণ ঠিক থাকতো কেবল সেগুলোতেই স্বাক্ষর করতাম। যাদের কাগজগুলো ঠিক ছিলো না, বা ত্রুটিপূর্ণ ছিলো সেগুলো স্বাক্ষর করতাম না। এতে নিজেদের স্বার্থ হাসিল না হওয়ার কারণে দুষ্টচক্রগুলো আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে আসছে।

একটি ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার আগে একজন বক্তা বলে গেছেন আমি বুঝে শুনে সই করি। একটি পরিবারের ৭/৮ জন ওয়ারিশ, তিনজন মিলে আমার কাছে ওয়ারিশ সার্টিফিকেট নিতে আসলো বাকীদের বাদ দিয়ে। আমি তো জানি তাদের আরও ভাই বোন আছে, তাই আমি সই করি না। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, ব্যর্থতা আমারই। আমার পাশে যারা বা যে থাকতেন, ধরে নেন আজকের কাউন্সিলর (কবির হোসাইন) উনি আমাকে দিতেন সই করতে। আমি বুঝতে পারলাম উনাকে ম্যানেজ করা হয়েছে, যাতে উনি আমার কাছ থেকে সইটা নিয়ে দেন।

তিনি বলেন, আমি তো সই দেই না, আমি জানি এ বাপের ঘরে আরো সন্তান আছে। বাকীদের সাথে নিয়ে আসেন তাহলেই আমি সই দিবো, বলে দিতাম এই কথা। আর এই কথায় অনেকের গায়ে লাগতো, অনেকে আবার এটাকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে, এটাকে পুঁজি করে মিথ্যাচার করতে লাগলো যে, মুন্নার কাছে গেলে কেউ সই পায় না। এক্ষেত্রে ব্যর্থতা কিন্তু আমার, আমি তাদের (বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসাইন) পাশে রেখেছি, চাকরি দিয়ে, আমার কেয়ারটেকারও ছিলো, তারাই এগুলো করেছে।

বিশৃঙ্খলাকারীদের হুশিয়ারী দিয়ে মুন্না বলেন, কোনো বিতর্কের সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন না। এই এলাকায় দুই/একজন খুব লম্ফ-জম্ফ করছে। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন না, তারা এই এলাকার ভোটার না। আমি আপনাদের সাবধান করে দিচ্ছি, আপনি অন্য এলাকার ভোটার, এই এলাকায় বসবাস করছেন, করেন ভালো কথা। কিন্তু আমার সমাজের মানুষকে, পঞ্চায়েতের মানুষকে, আমার বাপ-চাচাকে বিরক্ত করবেন না, আপনি এই এলাকার ভোটার না। এই এলাকায় ২/৩টি কমিশনার আছে, শুনি। কমিশনাররা একটু সাবধান হয়ে যান, সামনে নির্বাচন আসছে, একটু সাবধান হয়ে যান, অলি-গলিতে কমিশনার হয়ে গেছেন।

কবির হোসাইন সম্পর্কে মুন্না বলেন, ধোকা দিয়ে বোকা বানানোর দিন শেষ। গত নির্বাচনে উনি (কবির হোসাইন) বলেছেন, পরিবর্তন চাই, পরিবর্তনের অঙ্গিকার নিয়ে মাঠে নেমেছেন। উনি বলেছেন পরিবর্তন করবেন, পরিবর্তন করেছে। কেউ বলতে পারবেন যে, সে কখনো বলেছে আপনার বা সমাজের বা এলাকার পরিবর্তন করবেন? সে একটা রহস্যময় একটা বক্তব্য দিয়েছিলো, আমাদেরকে বোকা বানিয়েছিলো, সত্যিকার অর্থেই আমাদের ধোকা দিয়েছিলো। হ্যা, পরিবর্তন উনি করেছেন উনার এবং উনার পরিবারের সদস্যদের।