মেয়র পদে এড. সাখাওয়াতের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

71

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান।

আজ রবিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে জেলা নির্বাচন অফিস থেকে এ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তিনি।

মনোয়নপত্র সংগ্রহ শেষে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আপনারা জানেন যে বাংলাদেশে বর্তমানে মানুষের ভোটের অধিকার নেই। যার কারণে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ অনেকগুলো দল বর্তমানে যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন, সেখানে অংশগ্রহন করছে না। ইতিপূর্বে আমাদের দল থেকেও নির্বাচনে অংশ না নেয়ার একই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দলের আরেকটি নির্দেশনা আছে যে, যদি স্বতন্ত্র থেকে কেউ নির্বাচন করতে চায় তাহলে দলের থেকে কোনো আপত্তি থাকবে না।

দলের কাছে ধানের শীষ প্রতীকের জন্য আবেদন করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, তবে একটা বিষয় হলো আমি নমিনেশন পেপার সংগ্রহ করলাম, আমি দলের সাথে যোগাযোগ করছি এবং দল যদি এ নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে ধানের শীষের জন্য আবেদন করবো। দল যদি আমাকে সমর্থন দেয় তাহলে ধানের শীষের প্রার্থী হবো। আর দল যদি অন্য কাউকে সমর্থন দেয় তাহলে আমি ধানের শীষের সমর্থনে আমার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করবো। কিন্তু দল যদি নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে সিটি কর্পোরেশনের জনগনকে সাথে নিয়ে, জনগনের স্বার্থে, মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের স্বার্থে আমি প্রয়োজনে দলের নির্দেশনা নিয়ে দরকার হলে আমি নির্বাচনে থাকবো।

সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রত্যাশা রেখে তিনি বলেন, বর্তমানে তো মানুষের ভোটের কোনো অধিকারই নাই, এ সকল কারণে দল নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নির্বাচনগুলো বর্জন করেছে। আমরা চাচ্ছি যে নারায়ণগঞ্জে একটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক।

ইভিএম প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়ে সাখাওয়াত বলেন, এ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যে অসংগতিটা দেখছি তা আমি আজ আপনাদের মাধ্যমে বলতে চাই যে, নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচনটা ইভিএম এর মাধ্যমে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি মনে করবো, এ নির্বাচন কমিশনারের এটা সর্বশেষ নির্বাচন। তাদের ইতিপূর্বে যে ভুল-ত্রুটিগুলো ছিলো, সর্বশেষ যাওয়ার সময় আবার তাদের উপর যে কালিমা পড়েছে তার পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করে যাবেন না নিশ্চয়ই। ইভিএম প্রত্যাহার করে ব্যালটের মাধ্যমে যাতে ভোট নিশ্চিত হয়, নির্বাচন কমিশন সেই ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে আমি আশাবাদি।

বিএনপি থেকে আরো দু-চারজন মনোনয়ন সংগ্রহ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি একটি বড় দল, দল থেকে যে কেউ মনোনয়ন সংগ্রহ করতে পারে, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নাই।

গত নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ডা. আইভীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করে বেশ আলোচিত হয়েছিলেন, এবার আপনি কি তেমনিভাবে জনগনের সাড়া সমর্থন পাবেন বলে আশা করছেন ? গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের উত্তরে এড. সাখাওয়াত বলেন, নারায়ণগঞ্জে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমিসহ আমরা অনেকেই সোচ্চার ছিলাম। নারায়ণগঞ্জে একটি নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছিলো, সেই ক্ষেত্রে বর্তমানে যে মেয়র রয়েছেন, উনি কোনো প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ বা বিচারের জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহন করে নাই। বর্তমানে যারা সরকারী দলের সংসদ সদস্য আছে, তারাও কিন্তু সেই বিচারটির জন্য সোচ্চার ছিলেন না। আমার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং নারায়ণগঞ্জবাসী তথা আইনজীবীসহ সমগ্র নারায়ণগঞ্জবাসীর আন্দোলনের মুখে এই বিচার করতে সফল হয়েছিলাম।

সিটি কর্পোরেশনের দুরবস্থা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা মনে করি, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের যে দুরবস্থা তা থেকে একটি ভালো অবস্থায় নেয়ার জন্য একটি স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ নির্বাচন খুবই প্রয়োজন। আমি মনে করি, সামনে যে নির্বাচন তা অত্যন্ত নিরপেক্ষ হবে এবং সর্বশেষ নির্বাচন হিসাবে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়টার প্রতি খেয়াল রাখবেন। একইসাথে ইভিএম প্রত্যাহার করে ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন।

নির্বাচন নিরপেক্ষ হলে আপনি কি জয়ের প্রত্যাশা করছেন কিনা গণমাধ্যম কর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে সাখাওয়াত বলেন, আপনারা সারা বাংলাদেশে দেখেছেন আওয়ামীলীগের বিশেষ করে নৌকার মার্কার বিরুদ্ধে একটি বিশাল জনমত তৈরি হয়েছে। নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ হয় তাহলে আর জনগন যদি ভোট দিতে পারে সেই জনমতের প্রতিফলন এ নির্বাচনে আপনারা দেখতে পাবেন এবং আশা করি বিপুল ভোটের ব্যবধানে জনমতের প্রতিফলন সংঘটিত হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আনিসুর রহমান সানি, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এড. সরকার হুমায়ন কবির, মনির হোসেন খান, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাগর প্রধান, মহানগর মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক এড. আনোয়ার প্রধান প্রমুখ।