প্রতিপক্ষের সমর্থককে মারধর করলো বিভা হাসান’র সমর্থকরা

20

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

উচ্চস্বরে মাইক বাজানোর কারণে মাইকের শব্দ কমানোর অনুরোধ করায় বাড়িওয়ালাকে মারধর করেছে দুর্র্ধষ সন্ত্রাসী হিসাবে পরিচিত বিএনপির ক্যাডার হাসান আহমেদের স্ত্রী ও নাসিক ১৬, ১৭ ও ১৮ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও বর্তমান কাউন্সিলর প্রার্থী আফসানা আফরোজ বিভা হাসান।হামলায় আহত হন বাড়িওয়ালা রনি মন্ডল (৩৪), তার বৃদ্ধা মা, ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী ও দুধের শিশু বাচ্চা।

বৃহস্পতিবার (০৯ ডিসেম্বর) বিকেলে শহীদনগর এলাকার মেম্বার গলিতে ঘটে এ ঘটনা। এ ঘটনায় হামলার শিকার রনি মন্ডল বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে রনি মন্ডল উল্লেখ করেন, আমার বাড়ীর ছাদে একটি নির্বাচনী উঠান বৈঠকের মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে বিবাদী আনোয়ার দেওয়ান মাতবরের সাথে কথা কাটাকাটি হলে ২ নং বিবাদী মাসুম দেওয়ান ও ৩নং বিবাদী রবিন দেওয়ান অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে। আমি প্রতিবাদ করায় সকল সকল বিবাদীরা আমাকে, আমার মা, ভাই, ভাইয়ের স্ত্রীকে এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মারে। ৪নং বিবাদী অমি এসময় আমার কোলে থাকা দুধের শিশু বাচ্চার গালেও চর-থাপ্পর মারে এবং তারা আমার মোবাইল ও বাড়ির গেইট ভাংচুর করে। এছাড়া তারা চলে যাওয়ার সময় আমার ক্ষতি করার বিভিন্ন হুমকি দিয়ে যায়।

এ বিষয়ে রনি মন্ডল গণমাধ্যমকে জানান, সন্ধ্যার সময় বর্তমান মহিলা কাউন্সিলর বিভা হাসান আপার নির্বাচনী অনুষ্ঠান হবে আমাদের বাড়ির সামনে এ কারণে দুপুর থেকেই আমাদের বাড়ির ছাদের উপর মাইক লাগানো হয়েছে। মাইকের শব্দে আমার ছোট শিশু বাচ্চার সমস্যা হওয়ায় আমি তাদেরকে অনুরোধ করি মাইকটা একটু সরিয়ে দেয়ার জন্য বা একটু ঘুড়িয়ে দেয়ার জন্য। এসময় আমাদের এলাকার মাতবর তথা আনোয়ার দেওয়ান মাতবর ও তার ছেলে মাসুম দেওয়ান, রবিন দেওয়ান, নাতি অমি এসে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তারা আমাকে, আমার বৃদ্ধা মা, ভাই, ভাইয়ের স্ত্রীকে মারধর করে এবং দুধের শিশু বাচ্চার গালে চর-থাপ্পর মারে।

তিনি আরও বলেন, মাসুম আমার বাড়ির গেইট ও আমার মোবাইল ভেঙ্গে ফেলেছে। ওরা এলাকার মধ্যে অনেক অত্যাচার করে বলেও জানায় রনি।

রনির মা বলেন, আমার ছেলে ২টাকে বাচাঁতে গেলে আমার উপর দিয়ে এসে আমার ছেলেদের মারধর করেছে, আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে। এমনকি আমার এই শিশু নাতিকে ২ টা থাপ্পর দিয়েছে মাসুম, বাচ্চাটার চিৎকার কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছিলো না। বাচ্চাটার গাল-কান লাল হয়ে গেছে।

এদিকে এলাকাবাসীর সাথে আলাপকালে তারা জানায়, রনি মন্ডল হচ্ছে বিভা হাসানের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী জুয়েলী ভুইয়ার সমর্থক। আর আনোয়ার দেওয়ান মাতবর ও তার ছেলেরা বিভা হাসানের সমর্থক। মূলত এ কারণেই আনোয়ার মাতবর ও তার ছেলেরা রনি মন্ডল ও তার মা-ভাইকে মারধর করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন মুরুব্বী বলেন, এমনিতেই বিএনপির ক্যাডার হাসান ও তার স্ত্রী বিভা হাসান ১৬, ১৭ ও ১৮ নং ওয়ার্ডে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বলতে পারে না। তারই ধারাবাহিকতায় আজ এই পরিবারটিকে মারধর করেছে বিভার গুন্ডাবাহিনী হিসাবে পরিচিত আনোয়ার দেওয়ান মাতবর ও তার ছেলেরা।

এদিকে সচেতন মহলের মতে, মনোনয়পত্র সংগ্রহের পরে প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে যে কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণা নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন। প্রচার-প্রচারণাই যেখানে নিষেধ, সেখানে মাইক বাজিয়ে উচ্চস্বরে এমন একটি আয়োজন করা এবং সেই আয়োজনকে ঘিরে একটি নিরীহ পরিবারকে মারধর করা কোনোভাবেই একজন প্রার্থী ও তার সমর্থকদের উচিত নয়। তার উপর এমন প্রার্থী যিনি বর্তমানে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর হিসাবে দায়িত্বে রয়েছেন।

এসব বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে আফসানা আফরোজ বিভা হাসান বলেন, আমি এসব বিষয়ে কিছুই জানি না। এইমাত্র আপনার কাছ থেকে শুনলাম।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পরে মাইক ব্যবহার করে উঠান বৈঠক করায় আচরণ বিধি লঙ্ঘন হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে বিভা হাসান বলেন, প্রতিটা প্রার্থীই মাইক ব্যবহার করে অহরহ উঠান বৈঠক করছে তাদের কি আপনারা এই প্রশ্ন করেন? আমারটায় কেন এতো সমস্যা?

আপনি বর্তমানে প্যানেল মেয়র হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে সেক্ষেত্রে মানুষ আপনার কাছ থেকেই বেশী দায়িত্বশীল আচরণ আশা করে। তাছাড়া আপনার মাইক ব্যবহার নিয়ে একটি সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে এবং এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে তাই আপনাকে জিজ্ঞাসা করা। একথার উত্তরে তিনি বলেন, আসলে এই প্রোগ্রামটা আমি করি নাই, আমার এলাকাবাসী করছে, আমি জানতাম না। মাইক যে লাগানো হয়েছে, এটা নিয়ে যে গন্ডগোল হয়েছে এটা আমি জানিই না।