
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
গত ১৬ই জানুয়ারি সম্পন্ন হওয়া নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের এবারের নির্বাচনে ১৮ নং ওয়ার্ডবাসীর ভোটের রায়ে আবারো জয়লাভ করেন সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কবির হোসাইনকে তেরশ আট ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন তিনি।
এছাড়া মাকুসুদুর রহমান জাভেদ ২ হাজার ৩৯২, খলিলুর রহমান ৫৩৯, হান্নান মিয়া ৩৩৮ ও শাকিল মিয়া পেয়েছেন ৬৩ ভোট। জনতার রায়ে পুন:নির্বাচিত হওয়ার পরও সাবেক সফল কাউন্সিলর মুন্নাকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে পরাজিতদের কেউ কেউ এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।
তাদের মতে, গত পাঁচ বছর ব্যবসায়ীদের উপর যে জুলুম-অত্যাচার চালানো হয়েছে তারই প্রতিবাদে বিপুল ভোটের ব্যবধানে মুন্নাকে জয়ী করে ব্যবসায়ী-শ্রমিক, দিনমজুরসহ সমগ্র ওয়ার্ডবাসী। কিন্তু নিজেদের কুকর্মের কারণে ভোটের ময়দানে পরাজিত হওয়া কতিপয় দুষ্টচক্র এ পরাজয় মেনে নিতে না পেরে মুন্নার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। তবে, এ সকল ষড়যন্ত্রে কোনো কাজ হবে না বলেও উল্লেখ করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের অনেকে জানান, পরাজিত এক প্রার্থী, তার ভাই ও সাঙ্গপাঙ্গদের অত্যাচার-জুলুম, চাঁদাবাজী-তোলাবাজির কারণে এলাকায় থাকাটাই দায় হয়ে পড়েছিলো। মাদকসেবীদের শেল্টার দেয়া, পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাং তৈরী, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদাবাজীসহ শ্রমিকদের কাছ থেকেও চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে পরাজিত ঐ প্রার্থী ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে এমনটাই দাবি স্থানীয় ব্যবসায়িদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐতিহ্যবাহী নিতাইগঞ্জের এক ব্যবসায়ী বলেন, ২০০৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত চৌদ্দ বছর আমরা নির্বিঘ্নে ও শান্তিতে ব্যবসা পরিচালনা করেছি। চাঁদা চাওয়া তো দুরের কথা উচু গলায় ব্যবসায়ীদের উপর কেউ কোনো কথা বলতে বা অন্যায়ভাবে চাপ প্রয়োগ করতে সাহস পায় নি। কেননা তৎকালীণ কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না ভাই আমাদের পাশে ছিলেন এবং ব্যবসায়ীদের সর্বাত্মক সহযোগীতা করেছেন। কিন্তু গত পাঁচ বছরে চাঁদাবাজী-তোলাবাজির কারণে ব্যবসায় টিকে থাকাটাই দুরহ ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছিলো। এই পাঁচ বছরে অহরহ চুরির ঘটনা ঘটতো মিলসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে, নিরাপত্তার কোনো বালাই ছিলো না নিতাইগঞ্জে। শুধু কি তাই, চাঁদাবাজদের কারণে ওয়েস্টিজ এর ন্যায্যা মূল্য পেতাম না কখনোই।
তবে এবারের নির্বাচনে মুন্না ভাইয়ের জয়ে আমরা ব্যবসায়ীরা বেশ খুশী। কেননা মুন্না ভাইয়ের সময়ে পুরো নিতাইগঞ্জে যে শান্তি বিরাজমান ছিলো তা আবারো ফিরে আসবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি দেখতে পেলাম কামরুল হাসান মুন্নাকে জড়িয়ে একটি ভিত্তিহীন ও মনগড়া সংবাদের মাধ্যমে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে অনেকে, যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক বলে আমি মনে করি।
প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরে অপর এক ব্যবসায়ী বলেন, সদ্য পরাজিত এক প্রার্থী, তার ভাই ও সাঙ্গপাঙ্গরা ন্যায্য মুল্য না দিয়ে আটা-ময়দার বিভিন্ন মিল থেকে জোরপূর্বক ওয়েস্টিজ নিয়ে যেতো। সেদিনও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর চেষ্টা করলে ব্যবসায়ীরা ন্যায্য মুল্যে ওয়েস্টিজ বিক্রির কথা বললে তাদের উপর চড়াও হয় ঐ সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ চক্র। এ ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে পুন:নির্বাচিত কাউন্সিলর মুন্নার লোকজন এসে চাঁদাবাজদের বাঁধা দেয় এবং ন্যায্য মূল্যে ওয়েস্টিজ ক্রয় করতে বলে। এতে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে পরাজিত ঐ প্রার্থীর লোকজন। ফলে ব্যবসায়ীরাও সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং কামরুল হাসান মুন্নার প্রশংসা করেন।
এদিকে, ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে কতিপয় সাংবাদিককে মুল ঘটনা না জানিয়ে অসত্য তথ্য তুলে ধরে মিথ্যা বক্তব্য দেয় পরাজিত ঐ প্রার্থীর অনুগামী ও অনুসারীরা।
তবে, কোনো অপপ্রচারেই মুন্নাকে বদনাম করা যাবে না যা ১৬ তারিখে ভোটের মাধ্যমেই জানিয়েছে ওয়ার্ডবাসী এমনটাই দাবি মুন্না সমর্থকদের। তারা বলেন, ২০১৬ তে ভুল-ভাল বুঝিয়ে ওয়ার্ডবাসীকে বোকা বানিয়ে ধোকা দিয়েছিলো একজন। এবার সেই ভুল বুঝতে পেরে পরিবর্তন করে আবারো মুন্নাকে জয়ী করেছে সাধারণ জনগন।