ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতাকে প্রাপ্য সম্মান দেয়া হয়নি নারায়ণগঞ্জে!

39
ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতাকে প্রাপ্য সম্মান দেয়া হয়নি নারায়ণগঞ্জে!

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

নারায়ণগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় স্মরণ করা হয়নি বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা, জাতীয় অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে এমন অভিযোগ সমিতির সাবেক ও বর্তমান সদস্যসহ প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত স্টাফ-নার্সসহ অনেকের।

জানা গেছে, মঙ্গলবার এই গুণীজনের ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী ছিলো। ১৯৮৯ সালের এই দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ্ব বাসভবনে ইন্তেকাল করেন তিনি। তাই দিনটিকে জাতীয় ডায়াবেটিস সেবা দিবস হিসাবে পালন করে ডায়াবেটিক সমিতি।

দিনটি উপলক্ষ্যে ও দেশের অন্যান্য জেলায়, ডায়াবেটিক সমিতিগুলোতে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, মিলাদ, দোয়া, আলোচনা সভাসহ ব্যাপক কর্মসূচী পালন করা হলেও ব্যতিক্রম ছিলো শুধু নারায়ণগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতি। ডায়াবেটিস চিকিৎসা সেবায় অনন্য অবদান রাখা জাতীয় এই অধ্যাপক স্মরণে তেমন কোনো কর্মসূচী পালন করতে দেখা যায় নি নারায়ণগঞ্জে। দায়সাড়া ভাবে ৬০/৭০ জনের বিনামুল্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করেই যেন হাপিয়ে পড়েছেন নারায়ণগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতি। প্রতিষ্ঠাতাকে যথাযোগ্য মূল্যায়ণ না করায় ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টাফ ও নার্সরা বলেন, এবারই প্রথম এমন দেখলাম। প্রতিবার আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হতো। কিন্তু এবার কি কারণে এমন হলো তা আমরা জানি না। মূলত, বর্তমান কমিটি হয়তো ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহীম সাহেবের গুরুত্ব অনুধাবনই করতে পারছে না। তাই হয়তো তারা জাতীয় এই গুণীজনকে সম্মান দেখাতে পারছেনা বলেও অভিমত তাদের।

এদিকে, সমিতির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ ওয়াই এম হাসমত উল্লাহ বলেন, সমিতি থেকে আমাদের দাওয়াত দেয়া হয়নি। তাছাড়া শুধুমাত্র ফ্রি সেবা দিয়ে থাকলে, আমার মতে ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহীম সাহেবকে যথাযোগ্য মূল্যায়ণ করা হয়নি। জাতীয় এই বিশিষ্টজনকে নারায়ণগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতিতে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু দেয়া হয়নি বলেও মনে করেন তিনি।

আরেক সদস্য আজিজুল্লাহ বলেন, আমাদের কোনো সদস্যকেই দাওয়াত দেয়া হয়নি তাই আমি কিছু জানিনা। তবে আগে আমরা সকল সদস্যকে এদিন দাওয়াত করতাম, ফ্রি চিকিৎসা সেবা দেয়া, মিলাদ-দোয়া ও আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচী পালন করতাম। তবে, এবার কেন তারা এমনটা করলো তা আমার বোধগম্য নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন চুন্নু বলেন, আমরা ৬০/৭০ জন রোগীকে ফ্রি ডায়াবেটিস পরীক্ষা করেছি। এটা পর্যাপ্ত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যা। দেশের অন্যান্য জায়গায় নানা কর্মসূচী পালিত হয়েছে জানালে তিনি উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, দেশের কোন কোন জায়গায় আপনি গিয়েছেন। প্রতিউত্তরে এ প্রতিবেদক জানান, এখন ডিজিটাল যুগ কোথাও যেতে হয়না। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দরুন সকল খবরই পাওয়া যায়।

সমিতির সভাপতি কাশেম জামাল বলেন, ফ্রি ক্লিনিক সেবা দিয়েছি। মহৎ এ ব্যক্তির মৃত্যুবার্ষিকীতে শুধু ফ্রি সেবা, এতে তাকে যথাযোগ্য মর্যাদায় স্মরণ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই যথাযোগ্য মর্যাদায় স্মরণ করা হয়েছে।

দেশের অন্যান্য স্থানে ব্যাপক কর্মসূচী পালিত হলেও এখানে অন্য কোনো আয়োজন ছিলো না, এটা নারায়ণগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির কার্পণ্যতা কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তর্কের বিষয়। আপনার কাছে মনে হতে পারে কার্পণ্যতা, আবার আমার কাছে মনে হয়েছে ঠিকই আছে, মানুষকে সেবা দিয়েছি।

পূর্বের বছরগুলোতে আরও কর্মসূচী পালন করা হতো, এবার হলো না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামীতে আমরা আরও কর্মসূচী পালন করবো। মাত্র তো দায়িত্ব নিয়েছি, কিছুটা সময় দেন আমাদের।