
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যে কজন নেতা বা এমপির পরিচিতি দেশব্যাপী তাদের মধ্যে অন্যতম নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। গত ২৭শে আগস্ট লক্ষাধিক লোকের বিশাল জনসভা করে আবারও আলোচনায় থাকা শামীম ওসমান এবার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের গুডবুকে স্থান করে নিয়েছেন।
সম্প্রতি সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সকল নেতৃবৃন্দসহ আমন্ত্রিত অন্যান্য অতিথিদের মুখে ছিলো শামীম ওসমান ও ওসমান পরিবারের গুনগান। ওসমান পরিবারের অবদান ও শামীম ওসমানের ভুয়সী প্রশংসা করেন নেতৃবৃন্দরা।
শুধু তাই নয়, শামীম ওসমান বিরোধীদের এক হাত নেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক, পাঁচ বারের এমপি মির্জা আজম। স্পষ্ট করেন কেন দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন শামীম ওসমান। দেশত্যাগ না করলে কেমন হতো পরিস্থিতি সে বিষয়েও বর্ণনা করেন তিনি।
সম্মেলনের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম তথা সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, সম্মেলনে উপস্থিত আছেন আরেকজন আপনাদের প্রিয় সন্তান, যিনি সবসময়ই আপনাদের ও আওয়ামীলীগের সাথে রয়েছেন, আপনাদের প্রিয় নেতা এবং বাংলাদেশে যার বহুল পরিচিতি, সকলের অনেক প্রিয়, আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠায় যে পরিবারটি বঙ্গবন্ধুকে অনেক বেশী সহযোগীতা করেছিলো, সাহস যুগিয়েছিলো, আশ্রয় দিয়েছিলো আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের, সেই সংগ্রামী পরিবারের কৃতি সন্তান একেএম শামীম ওসমান এমপি।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী, ছয় বারের এমপি মির্জা আজম বলেছেন, উপস্থিথ রয়েছেন এই নারায়ণগঞ্জের কৃতি সন্তান, সারা বাংলাদেশব্যাপী যার পরিচিতি, বাংলাদেশের বাইরেও যার পরিচিতি, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও তিনবারের নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য, যাকে মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত ভালোবাসেন সেই একেএম শামীম ওসমান।
শামীম ওসমানের দেশত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী না হন তাহলে আমাদের সকলেরই অবস্থা কিন্তু ঐ ২০০১ সালের চেয়েও ভয়ঙ্কর অবস্থা হবে। ২০০১ সালে আমাদের জননেতা শামীম ওসমানের মতো নেতাও বাংলাদেশে থাকতে পারেন নাই। আমাদের দেশের অনেক প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ, জননেতা বাংলাদেশে থাকতে পারেন নাই। যদি থাকতো তাহলে তাদের পরিণতি ঐ যে খুলনা মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি মঞ্জুরুল ইমামকে প্রকাশ্যে দিনের বেলা বোমা মেরে হত্যা করা হয়েছিলো।
তিনি বলেন, ঐ নাটোরের মমতাজ, যিনি দুই দুইবারের সংসদ সদস্য ছিলো। তাকে প্রকাশ্যে চার রাস্তার মাথায় কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিলো। আমাদের আহসান উল্লাহ মাস্টারের কথা মনে আছে, প্রকাশ্যে দিনের বেলা নিজ্ব বাড়ির ভেতরে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করা হয়েছিলো। আমাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় জননেতা শাহ এস এম কিবরিয়াকে তার নিজ সংসদীয় এলাকায় প্রকাশ্যে গ্রেনেড মেরে হত্যা করা হয়েছিলো।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, এ সমস্ত নেতৃবৃন্দের যে পরিণতি হয়েছে ঐ শামীম ওসমান সাহেবরা যদি বাংলাদেশে থাকতেন তাহলে তাদেরও কিন্তু একই পরিণতি হতো। আমরাও প্রতিদিন বাড়ি থেকে চিরবিদায় নিয়ে বেড়িয়ে যেতাম। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর রাতে যে বাড়িতে ফিরবো এই প্রত্যাশা আমরা করি নাই।
আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম ধন্যবাদ জানিয়েছেন শামীম ওসমানকে। তিনি বলেন, শামীম ওসমান বলেছেন মুখে বলবেন আওয়ামীলীগ করি, শেখ হাসিনা আপা আমাকে চিনে, আমার পিতা, পুরো পরিবার নৌকা কিন্তু আওয়ামীলীগের সিদ্ধান্ত মানবেন না আপনি কিসের আওয়ামীলীগ। আওয়ামীলীগের সিদ্ধান্ত মানবেন তবেই আপনি আওয়ামীলীগ, যত বড় সিদ্ধান্তই হোক, যত কঠিন সিদ্ধান্তই হোক না কেন।
তিনি আরও বলেন, জনপ্রিয় জননেতা গুনকীর্তন আমিও করি। সোনারগাঁয়ে হাসনাত পরিবার ছাড়া আওয়ামীলীগ হয় না। নারায়ণগঞ্জে শামসুজ্জোহা খান মসলিস ছাড়া আওয়ামীলীগ হয় না।