
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে ধরা হয় যুবলীগকে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ১৯৭২ সালের ১১ই নভেম্বর শেখ ফজলুল হক মনি কর্তৃক বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। যে কোন ক্রান্তিলগ্ন সময়ে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে যে সকল সংগঠন ভুমিকা রেখেছে তাদের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ অন্যতম।
তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ যুবলীগও বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূণ অবদান রেখে আসছে দীর্ঘদিন যাবৎ। কিন্তু বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ যুবলীগের অবস্থা অনেকটা নড়বড়ে। জেলা যুবলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন নেতা জেলা-মহানগর আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। ১১ বছর আগে পৌরসভা থেকে সিটি কর্পোরেশন হলেও পুরোনো সেই শহর যুবলীগের কতিপয় নেতাকর্মী দিয়েই চলছে মহানগর যুবলীগের কার্যক্রম।
এদিকে, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা কাদির ও বাদলকে সম্মেলন করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এতে করে খানিকটা চাঙ্গা ভাব দেখা দিচ্ছে যুবলীগের পদ-প্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মাঝে। নভেম্বরেই জেলা যুবলীগের সম্মেলন করার নির্দেশ দিলেও আদৌ এ সম্মেলন হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন অনেকেই। এ নির্দেশকে কথার কথা বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
তাদের মতে, এর আগেও বহুবার জেলা-মহানগর যুবলীগের কমিটি করার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু বড় বড় নেতাদের অনীহার কারণে তা হয়নি, আর খুব শীঘ্রই হবে বলেও মনে করেন না তারা। আর যদি হয়ই তাহলে তবে নাগাদ হবে তা স্পষ্ট করে জানতে চায় তৃণমূল।
দলীয় সুত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির ও এড. আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল যথাক্রমে জেলা যুবলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর পর দীর্ঘ ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় নি। ইতিমধ্যেই ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি পদে আসীন হন আব্দুল কাদির, সেই সময়ে একবার এবং গত ২৩ অক্টোবর পুনরায় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হন ভিপি বাদল। এছাড়াও জেলা যুবলীগের তৎকালীণ কমিটির জাকিরুল আলম হেলাল, শাহ নিজাম সহ অনেকেই বর্তমানে জেলা-মহানগর আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
একইভাবে ২০০৫ সালে গঠিত শহর যুবলীগের সভাপতি হন শাহাদাত হোসেন ভুইয়া সাজনু ও সাধারণ সম্পাদক হন আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জল। ১৪ বছর আগের শহর যুবলীগের কমিটি দিয়েই চলছে মহানগর যুবলীগের কার্যক্রম। যা সংগঠনকে অনেক বেশী ভঙ্গুর ও দুর্বল করার পাশাপাশি নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির অন্তরায়। এছাড়াও, সাজনু ও উজ্জল দু’জন দুই মেরুর চিহ্নিত নেতা। দুই মেরুর বাসীন্দা হওয়ায় যেমনি সফল কোন কর্মসূচী পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে ঠিক তেমনি বর্তমানে তাদের সাংগঠনিক অবস্থাও কিছুটা দুর্বল বলে মনে করছেন মাঠ পর্যায়ের নেতা কর্মীরা।
নেতাকর্মীদের মতে, সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হোক। সংগঠনকে চাঙ্গা করত্বে নবীন-প্রবীন মিলিয়ে জেলা ও মহানগর যুবলীগের কমিটি গঠনের বিকল্প নেই। বিএনপি-জামাতের আন্দোলন থেকে শুরু করে, বিগত দিনে দলের সকল কর্মকান্ডে যাদের ভূমিকা ছিল তাদের নিয়েই কমিটি গঠন করার দাবী করেন তারা। তবে বিতর্কিতরাও নতুন কমিটিতে আসার পায়তারা করছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জল বলেন, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পরে তথা ডিসেম্বরের পরে মহানগর যুবলীগের সম্মেলন হতে পারে।
একই বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কল রিসিভ করেন নি আবদুল কাদির। মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায় ভিপি বাদল ও শাহাদাৎ হোসেন সাজনুর।