আগামী নির্বাচনে না:গঞ্জ-৩ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন কারা!

47
আগামী নির্বাচনে না:গঞ্জ-৩ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন কারা!

মোঃ সাইফুল ইসলাম সায়েম:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নানামুখী সমীকরণ করছে প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি। আওয়ামীলীগ চায় নির্বাচনের বর্তমান ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে, বিএনপির দাবী নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আর জাতীয় পার্টি অনেকটা সুবিধাবাদি পার্টির চরিত্র অবলম্বন করছে বলে জানা গেছে।

নির্বাচনের এখনো এক বছরের বেশী সময় বাকী থাকলেও ভেতরে ভেতরে নিজ নিজ দলের মনোনয়ণ প্রত্যাশীদের যাচাই-বাছাই করছে দলগুলো এমনটাই দাবী ঘনিষ্ঠ সুত্রের। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকার সবচেয়ে নিকটবর্তী জেলা হিসাবে নারায়ণগঞ্জর আসনগুলোর প্রতি সবগুলো দলেরই বিশেষ নজর থাকে।

নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ-ঐতিহ্যের দিক দিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনটি। তাই আগামী নির্বাচনে এ আসনে কারা হচ্ছেন রাজণৈতিক দলগুলোর প্রার্থী তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। আর এই সকল জল্পনাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে দেখা দেয় নানা হিসাব-নিকাশ ও বিশ্লেষণ।

আগামী নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বর্তমান সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা জাতীয় পার্টির মনোনয়ন চাইবেন তা প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়। অপরদিকে এই আসন থেকে সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাতের তেমন কোন বিকল্প না থাকায় আওয়ামীলীগের মনোনয়নের ব্যাপারে তিনি সবচেয়ে শক্ত দাবিদার। এছাড়াও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুর নামও শোনা যাচ্ছে। বিপরীতে, বিএনপি থেকে মনোনয়ণ প্রত্যাশী হিসাবে সোনারগাঁ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নানের নাম এককভাবে শোনা গেলেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে প্রার্থীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহলের মতে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি যদি এককভাবে অংশ নেয়, সে ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে পার্টির যুগ্ম মহাসচিব বর্তমান সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা জাতীয় পার্টির মনোনয়ন চাইবেন এ বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত করেই বলা যায়। তবে ভোটের লড়াইয়ে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মনোনয়ণ প্রত্যাশীদের সাথে রাজণৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে তিনি খুব একটা পাত্তা পাবেননা বলে মনে করে বিশ্লেষক মহল।

স্থানীয়দের মতে, এবার খোকার অবস্থান অনেকটা নড়বড়ে কেননা গত দুটি নির্বাচনে ভোটের লড়াই না থাকায় এবং আওয়ামীলীগ-জাতীয় পার্টির জোটের কারণে তিনি বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে একক প্রার্থী দিলে এবং বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে সাংসদ হওয়ার সুযোগটি তার হাতছাড়া হতে পারে বলে জানান স্থানীয়রা।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, এই আসনটি মুলত আওয়ামীলীগ ও বিএনপির ভোটব্যাংক হিসাবেই অধিক পরিচিত, আর তাই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে লড়াই হবে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে। এছাড়া আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে কায়সার হাসনাত মনোনয়ণ চাইবেন এবং মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনাও তারই সবচেয়ে বেশী বলে জানা গেছে।
কেননা, সাংসদ হিসাবে অতীতেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। হাসনাত পরিবার খুবই শক্তিশালী একটি পরিবার। তিনি নিজে সাবেক সাংসদ, তার বাবা একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবীদ, চাচা ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান। সবকিছু মিলিয়ে সোনারগাঁয়ে এই পরিবারের প্রভাব এখনো অক্ষুন্ন বলে মনে করেন স্থানীয় জনগনসহ রাজণৈতিক ব্যাক্তিবর্গ।

যদিও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের একটি বলয় রয়েছে সোনারগাঁয়ে, যারা কায়সার হাসনাতকে খুব একটা পছন্দ করেন না এবং তার বিরোধীতাও করেন। তবে, নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের বেশীর ভাগ নেতাকর্মীই কায়সার হাসনাতের পক্ষে রয়েছে। এছাড়া, সম্প্রতি শামীম ওসমানের সাথে তার দুরত্ব অনেকটাই কমে এসেছে বলেও দেখা গেছে।

আওয়ামীলীগের তৃণমূলের মতে, গত দুটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সাথে জোট থাকার কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেকটা দয়া করেই এই আসনটিতে লিয়াকত হোসেন খোকাকে জোট সরকারের সমর্থন দেয়। তা নাহলে তার চেয়ারম্যান নির্বাচন করার মতো যোগ্যতাও নেই বলেও দাবী তাদের।