
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মুসাপুর ইউনিয়নের মালিবাগ এলাকার তারিকুল ইসলামের স্ত্রী মুক্তা বেগম টুম্পার উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা ও ধর্ষণের চেষ্টা করে সন্ত্রাসী মনির, আলী আকবর, নাসির, ওয়াসিম, বাবুল, জহিরুল, মাসুম, আমু, আলামিন ও তাদের সহযোগী সন্ত্রাসীরা। মুক্তা বেগম টুম্পার চিৎকারে ধর্ষণ ও হত্যায় ব্যর্থ হয়ে এসময় তারা ব্যাপক লুটপাট করে মোবাইল ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী মুক্তা বেগম টুম্পা সংবাদ সম্মেলন করে অবিলম্বে এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসী ও তাদের পিছনের ইন্ধনদাতাদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
আজ শনিবার (১৩ মার্চ) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী মুক্তা বেগম টুম্পা।
লিখিত বক্তব্যে মুক্তা বেগম টুম্পা উল্লেখ করেন, আমি একজন গৃহিনী আমার স্বামী একজন প্রবাসী হিসাবে দীর্ঘদিন যাবত দেশের বাহিরে কর্মরত আছে। আমার ৭ বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। ইতিপূর্বে আমাদের ক্রয়কৃত বাড়ীর জায়গা ঠিকমতো বুঝিয়ে না পাওয়ায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করিলে পুলিশের সহযোগিতায় জায়গার সমস্যা সমাধান হয়। আমার প্রতিপক্ষ তথা উল্লেখিত এলাকার এ কুচক্রি মহলটি পুলিশের ভয়ে এ সমাধান মেনে নিলেও আমার বিরুদ্ধে বিভিন্নসময়ে বিভিন্নভাবে মিথ্যাচার, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে আসছে। এ চক্রের মুল হোতা ও চক্রটিকে ইন্ধনদাতা হিসেবে কাজ করছে একই এলাকায় বসবাসকারী আসলাম।
তারই ধারাবাহিকতায় ও পুর্ব শত্রুতার জের ধরে গত ৫ই মার্চ এলাকার শত্রু পক্ষ বিল্লাল তার ১৫ বছরের ছেলেকে দিয়ে আমার ছেলেকে অহেতুক মেরে রক্ত ক্ষরন ঘটায়। বিল্লালের ছেলে কেন আমার ছেলেকে মেরেছে বিষয়টি জানার জন্য তার বাড়িতে গেলে সেখানে তারা আমাকে অশ্লিল ভাষায় গালাগালি করে এবং আমার ছেলেকে শ্বাসরোধ করে মারার চেষ্টা করে। পরে আমি সেখান থেকে ছেলে সহ নিজের জীবন বাঁচিয়ে চলে এসে বন্দর থানায় এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করি।
এরই মাঝে কুচক্রিমহলটি আমার সম্মান ও মানহানি করার জন্য একটি ভুয়া ভিডিও বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেসবুকে বিভিন্ন অপপ্রচার করছে। একইসাথে আমার উপর যে হামলা হয়েছে সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী যারা স্বাক্ষী দিতে চায় সেই স্বাক্ষীদের উপর হামলা করার চেষ্টা করে এমনকি তাদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে যেন আমার পক্ষে পুলিশের কাছে কোন প্রকার সাক্ষী না দিতে পারে। ঐ সকল সাক্ষীদের ঘর ছাড়া করে পরে পুলিশ কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেনকে তাদের অপকর্মের ধারন করা ভিডিও ফুটেজ দেখালে সে তাৎক্ষনিক পুলিশ পাঠিয়ে আমার স্বাক্ষীদের ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়।
তাদের অপকর্মের কথা প্রতিবাদ করলে তারা ইতিপূর্বে আমাকে প্রানে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় এবং আমি যখনই আইনের শরণাপন্ন হই, তখন তারা আমাকে নিয়ে আজে বাজে কথা বলতে থাকে। অসহায় পেয়ে আমার সতিত্ব নষ্ট করতে অত্র এলাকার মালিবাগ গ্রামের চান্দের বাড়ি এলাকার মনির, আলী আকবর, নাসির, ওয়াসিম, বাবুল, জহিরুল, মাসুম, আলামিন টেলিফোনে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়।
আমি কোন উপায়ন্তর না পেয়ে বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানাই। পরে আমার শত্রু পক্ষ আমাকে বলে আমাদের কথায় রাজি না হলে আমার বিরুদ্ধে যে ভুয়া ভিডিও বানিয়েছে তা তারা ফেসবুকে ছেড়ে দিয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করবে। পরবর্তীতে তারা স্থানীয় কিছু মহিলা দিয়ে আমার বিরুদ্ধে আজে বাজে কথা শিখিয়ে একটি ভিডিও তৈরী করে সেটা ফেসবুকে ছাড়ে, এতে সমাজ ও পরিবারে আমার মান-সম্মান ক্ষুন্ন হয়। একজন মেয়ে হয়ে আমার সতিত্বে কলঙ্কর দাগ যেন না লাগে সে ব্যাপারে আমি এই সকল নরপিচাশদের সাথে যুদ্ধ করতে করতে আজ আমি ক্লান্ত তাই আজকের এই সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সামনে হাজির হয়েছি ন্যায় বিচার পেতে, সেই সাথে সমাজের এই সকল অপরাধিদের মুখোশ উম্মোচন করতে। আজ আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং নিজ বাড়ী ছেড়ে আমাকে অনত্র থাকতে হচ্ছে।
বন্দর থানা পুলিশ বিষয়টি অবগত আছে কিন্তু তারা এলাকার ক্ষমতাশালীদের কারনে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছেনা তবে আমি ন্যায় বিচার পেতে ও আমার জীবনের নিরাপত্তার জন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আজই লিখিত আকারে অভিযোগ দায়ের তথা মামলা করবো।
এই সকল চিহ্নিত অপরাধীরা ভবিষ্যতে যেন সমাজের আর কোন অসহায় অবলা নারীদের চরিত্র নিয়ে কথা না বলতে পারে, সন্ত্রাসী হামলা না করতে পারে সে জন্য আমি আপনাদের সকলের সহযোগিতা সহ মাননীয় পুলিশ সুপার, মাননীয় জেলা প্রশাসক, মাননীয় সংসদ সদস্য ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করছি। অনতিবিলম্বে এসকল অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।