বেশী বাড়াবাড়ি করবেন না, বাড়াবাড়ি ভালো নয় – আলাল

27
বেশী বাড়াবাড়ি করবেন না, বাড়াবাড়ি ভালো নয় - আলাল

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, রমজানের মধ্যে আমরা অবস্থান কর্মসূচী করছি। যারা রমজানের মধ্যে ট্রেন লাইন বন্ধ করে দিয়ে, রেল লাইনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলো, চট্টগ্রাম পোর্ট বন্ধ করে দিয়েছিলো, মানুষকে লগ্গি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে সেই লাশের উপর নাচানাচি করেছিলো, তারা এখন শান্তির কথা বলে। আমাদেরকে শান্তির ছবক দেয়। এটা কোন শান্তি, ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তিবাহিনী গঠন করা হয়েছি, শান্তি কমিটি। আওয়ামীলীগ কি সেই শান্তি কমিটির ভুমিকায় নেমেছে, আর সেখানে কি পুলিশের এক অংশ সহায়তা করছে।

তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সকল নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ও বিএনপির ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির অবস্থান কর্মসূচীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গতকাল শনিবার (০১ এপ্রিল) সাইনবোর্ড এলাকায় জেলা বিএনপির আহবায়ক মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অবস্থান কর্মসূচীতে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ।

বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শান্তির নামে গতকালকেও নওগায় বিএনপির ইফতার মঞ্চে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। পুড়িয়ে দিয়ে, জ¦ালিয়ে দিয়ে তারপর সেখানে শান্তির কথা বলে। এই জন্যই ৭১’র শান্তি কমিটির কথা আমাদের মনে পড়ে। এজন্যই ৭৩’, ৭৪’ এ পার্বত্য চট্টগ্রামে, পাহাড়ী অঞ্চলে দেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করার জন্য যে শান্তি বাহিনী করা হয়েছিলো, বর্তমানে আওয়ামীলীগের কর্মকান্ড দেখলে সেই শান্তি কমিটির কথা মনে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধে ৭১’র শান্তি কমিটি, ৭৩’র শান্তি বাহিনী আর আজকে আওয়ামীলীগের শান্তি সমাবেশ একাকার হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, শান্তি সমাবেশকে সহযোগীতা করতে গিয়ে কেউ যেন অশান্তির সৃষ্টি না করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি সেই অনুরোধ রইলো। আপনাদের আপনাদের ইউনিফর্মে লেখা নাই আওয়ামীলীগে পুলিশ লীগ। লেখা আছে বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ র‌্যাব, লেখা আছে বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা বাহিনী। বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না, বেশি বাড়াবাড়ির ফলাফল কখনোই কারো জন্য ভালো হয় নাই।

তিনি আরও বলেন, রাজপথ-কারাগার, গুম-খুন গত ১৫ বছরে আমাদেরকে এমনভাবে শিখিয়েছেন যে, এগুলোকে আমরা থোরাই কেয়ার করি। প্রত্যেকটি ঘরে মা তার সন্তানকে বলে যাও, যা হবার হবে, যেভাবে বেঁচে আছি এর চেয়ে মরে যাওয়া ভালো। আর সেই জায়গায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ইউনিফর্ম পরে আপনারা (পুলিশ বাহিনী) যদি সহযোগীতা করেন তাহলে তা খুব কষ্ট দেয় মানুষকে, মানুষ কিন্তু আপনাদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাইকে আমরা ঢালাওভাবে দোষারোপ করবো না, যারা বেশী করে বাড়াবাড়িটা করছেন তারা ভবিষ্যতের জন্য এই বিষয়ে সতর্ক থাকবেন আশা করি। না হলে আমাদের বিএনপির নেতাকর্মীদের কাকে কখন গ্রেফতার করবেন, সাজা দিবেন, গুম করবেন, সেজন্য যেভাবে তালিকা করছেন, আজকে পরিস্কার করে বলে দিতে চাই, আপনাদের তালিকা যে তৈরি হচ্ছে না এ গ্যারান্টি আপনাদের কে দিয়েছে। অনেক তালিকা হচ্ছে।

আলাল বলেন, ২০১৮ সালে সম্পর্কে বিশ^ব্যাংকের রিপোর্টে বাংলাদেশের অর্থনীতি, লূটপাট, বিদেশে টাকা পাচার প্রসঙ্গে তুলে বলা হয়েছিলো বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা হচ্ছে লাইসেন্স টু লুট। সেই লাইসেন্স টু লূটের মালিক আপনারা হতে যেয়েন না। কেননা এই লূটপাটের প্রত্যেকটি ঘটনার বিচার হবে, জবাবদিহিতা করা হবে। ৪৫ বছর পরে যদি জাতীয় নেতা শেখ মুজিবের হত্যাকান্ডের বিচার হতে পারে, তাহলে আজকে যারা অপকর্মে জড়িত তাদের বিচার হতে পারবেনা, একথা যারা বিশ^াস করে তারা আহাম্মকের স্বর্গে বাস করে। তাই আমি বলবো, যারা খেলা হবে খেলা হবে বলে হুমকি দেয়, ধমক দেয়, সেই খেলার প্লেয়ার আপনারা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) হবেননা। আমরা তাদের সঙ্গে খেলি, দেখা যাক, আপনারা দুরে থেকে আপনারা শান্তি রক্ষা করেন, এটা আপনাদের দায়িত্ব। বর্তমান সরকারের লুটেরাদের সরদারনি কিংবা তাদের সরদারদের কথায় আপনারা উত্তেজিত হবেন না, প্ররোচিত হবেননা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি এই অনুরোধ থাকলো।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শহীদুল ইসলাম টিটু, মাশুকুল ইসলাম রাজীব, লুৎফর রহমান খোকা, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এড. মাহফুজুর রহমান হুমায়ন, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শহীদুর রহমান স্বপন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ প্রমুখ।