
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
ফতুল্লা এলাকার মুর্তিমান এক আতঙ্কের নাম শফিকুল ইসলাম শামীম ওরফে শামীম তালুকদার। নিরীহ মানুষের জমি দখল, অর্থ আত্মসাত, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, চাঁদাবাজী ও মাদক বিক্রিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে ফতুল্লার বিতর্কিত এই যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে খলিলুর রহমান (৫৭) নামে বয়োজেষ্ঠ্য এক ব্যক্তির উপর হামলা চালায় শামীম তালুকদার। এসময় আত্মরক্ষার্থে শামীম তালুকদারের হাতের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকেই আঘাত করে নিজের জীবন বাচাঁয় খলিলুর রহমান। পরে শামীম তালুকদার ও তার সহযোগী চিহ্নিত অপরাধী আসলামকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বিতর্কিত যুবলীগ নেতা শামীম তালুকদারের কাছে খলিলুর রহমানের মেয়ের জামাতা ও দেওয়ান আসকর আলীর ছেলে দেওয়ান আলজিন অনির ব্যবসায়ীক লেনদেন বাবদ প্রায় ৩০ লাখ টাকা পাওয়া ছিলো। পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দিলে শামীম তালুকদার ৩টি চেক প্রদান করে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পরে ৩টি চেকই ডিজঅনার হয়, পরে তার বিরুদ্ধে বাদী হয়ে ৩টি চেক ডিজঅনার মামলা দায়ের করে দেওয়ান আলজিন অনি।
এছাড়া, দেওয়ান আলজিন অনি, তার দুই বোন দেওয়ান তানিয়া ও দেওয়ান মুনিয়ার মালিকানাধীন হরিহরপাড়ার সাড়ে এগার শতাংশ ভুমি দেখাশুনা ও রক্ষণাবেক্ষনের জন্য শামীম তালুকদারকে আম মোক্তারনামা প্রদান করেন। কিন্তু যথাযথ দায়িত্ব পালন না করে উল্টো জমি আত্মসাত করার পায়তারা করে শামীম। শামীমের কু-মতলব বুঝতে পেরে জমির প্রকৃত মালিক দেওয়ান আলজিন অনি, তার দুই বোন দেওয়ান তানিয়া ও দেওয়ান মুনিয়া আম মোক্তার নামা দলিল বাতিল করে। এতে শামীম ক্ষিপ্ত হয়ে দেওয়ান আলজিন অনির উপর হামলা চালায় এবং তার বাড়ি ঘর জালিয়ে পুড়িয়ে তাকে এলাকা ছাড়া করার হুমকি প্রদান করে। এ ঘটনায় গত ১৫ই মার্চ ফতুল্লা মডেল থানায় শামীমের বিরুদ্ধে জিডি করেন অনি।
অপরদিকে, গত ১৩ মার্চ দেওয়ান অনির শ্বশুর খলিলুর রহমানকে দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে তুলে নিয়ে যায় বিতর্কিত ঐ যুবলীগ নেতা। অস্ত্রের মুখে আটকিয়ে রেখে খলিলুর রহমানের স্ত্রীকে জোরপূর্বক ২টি ব্ল্যাঙ্ক চেক লিখে দিতে বাধ্য করে। উপায়ন্তর না পেয়ে, স্বামীকে বাঁচাতে ২টি ব্ল্যাঙ্ক চেক লিখে দেন খলিলুর রহমানের স্ত্রী ময়না বেগম।
সবশেষ, গত মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিকেলে ফতুল্লার পঞ্চবটিস্থ এলাকায় পুনরায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বয়োজেষ্ঠ্য খলিলুর রহমানকে তুলে নিতে চাইলে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় শামীম ও আসলাম সহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে চাইলে তা প্রতিহত করার চেষ্টা করে খলিলুল রহমান। এসময় নিজের জীবন বাচাঁতে সন্ত্রাসীদের সাথে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় নিজের জীবন বাঁচিয়ে পালাতে সক্ষম হন খলিলুর রহমান। পরে, তিনি জানতে পারেন ধস্তাধস্তির সময় আঘাত প্রাপ্ত হয় বিতর্কিত যুবলীগ নেতা খলিলুর রহমান।