নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের বড় সফলতা

46
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের বড় সফলতা

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

একদিনে জেলা পুলিশের বড় দুই সফলতা। গতকাল সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ৮০ হাজার পিছ ইয়াবাসহ একজনকে গ্রেফতার করেছে সোনারগাঁ থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি হলেন নীলফামারী জেলার সদর থানাধীন ইটখোলা ইউনিয়নের কানিয়াল খাতা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো. আখতারুজ্জামান ওরফে দিলশান (২৫)। এছাড়াও, আড়াইহাজার থানাধীন চাঞ্চল্যকর একটি হত্যা মামলার ০২ জন আসামী গ্রেফতারসহ ভিকটিমের মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (রূপগঞ্জ জোন) ও আড়াইহাজার থানা পুলিশ।

জেলা পুলিশের এ বিশেষ সফলতার বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, কাচপুর ব্রিজের নীচ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকার মূল্যের ৮০ হাজার পিছ ইয়াবাসহ একজনকে গ্রেফতার করে। তার নাম হচ্ছে আখতারুজ্জামান ওরফে দিলশান। সে চট্টগ্রাম থেকে ইয়াবাগুলো নিয়ে এখানে এসে গ্রেফতার হয়। এই প্রথম এই জেলায় ইয়াবার এতো বড় চালান আটক হলো। এর আগে এতো বড় চালান উদ্ধার নাই। এটা আমাদের জেলা পুলিশসহ থানা পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থার একটি বড় সফলতা। নারায়ণগঞ্জ পুলিশের প্রতিটি ইউনিট যে অপরাধ দমনে কাজ করছে তারই একটি উদাহরণ এটি।

চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় গ্রেফতার ২জনের বিষয়ে তিনি বলেন, গত ১২ই জুলাই আড়াইহাজার থানাধীন এলাকায় একজন অটো রিকশা চালককে হত্যা করে তার অটো রিকশাটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামীদের গ্রেফতারে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে রূপগঞ্জ জোন কাজ করে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা অটো চালককে হত্যায় জড়িত ২জনকে আমরা গ্রেফতার করি এবং যাকে হত্যা করা হয়েছে তার মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করি। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নাইম(৩০) ও মোঃ কাউসার(২৮)। এই দুজনকে আজকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছি। আশা করছি বিজ্ঞ আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী তারা দিবে।

তিনি আরও বলেন, যে ঘটনাগুলো ঘটে, তার সাথে জড়িত অপরাধীদের আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনছি। মানুষ যাতে ভালোভাবে, শান্তিমতো বসবাস করতে পারে, কোথাও যাতে কোনো ধরনের অরাজকতা বা বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সে লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সর্বদা কাজ করছে বলেও জানান জেলার সর্বোচ্চ এ পুলিশ কর্মকর্তা।

ইয়াবা উদ্ধারের বিষয়ে প্রেস রিলিজে উল্লেখ করা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার “খ” সার্কেল নারায়নগঞ্জ এবং অফিসার ইনচার্জ সোনারগাঁ থানার নেতৃত্বে জানতে পারে যে চট্টগ্রাম থেকে বিপুল পরিমান ইয়াবা নিয়ে একটি মাদক ব্যবসায়ী চক্র নারায়নগঞ্জ আসছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে সোনারগা থানাধীন কাঁচপুর রায়েরটেক এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকা গামী লেনে ফুটওভার ব্রিজের নিচে মহাসড়কের উপর থেকে এই ৮০ হাজার পিছ ইয়াবা সহ আখতারুজ্জামান ওরফে দিলশান নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ী চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারের লক্ষে অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় সোনারগাঁ গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার বিষয়ে প্রেস রিলিজে উল্লেখ করা হয়, গত ১২জুলাই জনৈকা শিরিনা বেগম এর স্বামী রুবেল মিয়া জীবিকা নির্বাহ করার জন্য তার ইজি বাইক নিয়ে বাহির হয়ে গিয়ে যথা সময়ে বাসায় না ফিরে আসলে তাহার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন বন্ধ পায়। গত ১৩ জুলাই দুপুর টায় লোক মুখে জানতে পারি আড়াইহাজার থানাধীন চারিগাও শিমুলতলা খালপাড় নামক হাত পা বাধা অবস্থায় তাহার স্বামীর লাশ পড়ে আছে। পরবর্তীতে আড়াইহাজার থানায় এ বিষয়ে মামলায় রুজু হলে থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা শাখা (রূপগঞ্জ জোন) ছায়া তদন্ত শুরু করে। তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সহিত জড়িত ১। নাইম(৩০) কে গ্রেফতার করা হয় এবং তার নিকট হতে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা। তার তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামী মোঃ কাউসার(২৮)কে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে গ্রেফতারকৃত আসামীরা চারজন গিয়ে মাধবদি থেকে পুরিন্দা যাওয়ার উদ্দ্যেশে ইজি বাইকটি ভাড়া করে। পুরিন্দা যাওয়ার সময় ঘটনাস্থলে পৌছা মাত্র রাত ও নির্জন হওয়ায় তারা চারজন মিলে জোড় পূর্বক ইজি বাইকের চালককে নামিয়ে ফেলে। গামছা দিয়ে হাত পা বেধে এলোপাথারি ভাবে মারধর ও মাথার পিছনে ছুরিকাঘাত করে হত্যা পূর্বক ইজি বাইক নিয়ে পালিয়ে যায়।