নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সন্ত্রাসীদের অবস্থান, ভীত সোনারগাঁবাসী

77

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

যতই দিন ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের, ততই নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে নৌকার প্রার্থীর কায়সার হাসনাতের পক্ষে তৎপর হচ্ছে দাগি সন্ত্রাসী ও চিহ্নিত অপরাধীরা। এতে করে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে সোনারগাঁয়ের সাধারণ ভোটারদের মাঝে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ইতিমধ্যেই কায়সার হাসনাতের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টির পায়তারা করছে বলে জানা গেছে। শুধু বিশৃঙ্খলাই নয়, নৌকার বাইরের অন্য প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা না করতে এবং নৌকার বাইরের ভোটারদের কেন্দ্রে না যেতে হুমকি-ধামকি দেয়ার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

সুত্রে জানা গেছে, দাগি সন্ত্রাসীরা খোলস ছেড়ে বের হয়ে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ভিড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব অপরাধীদের মধ্যে অন্যতম পৌরসভা ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সভাপতি মাহবুবুর রহমান রবিন। প্রায় ৪০ লাখ টাকার ২৮৩ টি মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ে জড়িত থাকায় ইতিমধ্যেই তাকে গ্রেফতার করে সোনারগাঁ থানা পুলিশ। এছাড়া, মাদক-অপহরণ, ছিনতাই-চাঁদাবাজি, ভুমিদস্যুতা, হামলা ও ভাংচুরসহ অন্তত ১৫টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় ছাত্রলীগ থেকেও তাকে ২ বার বহিস্কার করা হয়েছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসী এই রবিনকে দেখা গেছে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা করতে। শুধু প্রচারণাই নয়, নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে নিজের ছবিসহ ফেস্টুন বানিয়ে তা পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে সাটিয়েছেন বলেও জানা গেছে। বহিস্কৃতি হলেও সেখানে আবার ছাত্রলীগের পদ ব্যবহার করেছেন বহু অপকর্মের হোতা রবিন।

সংঘাত-সহিংসতার আশঙ্কা করে সোনারগাঁবাসী বলছে, নির্বাচন সুষ্ঠ, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে-নির্বাচন কমিশন থেকে এমন কথা বারবার বলা হলেও নৌকার প্রার্থী ভিন্ন প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দাগি সন্ত্রাসীদের কাছে রাখার চেষ্টা করছেন তিনি। আবার সন্ত্রাসীরা নিজেরাও কায়সার হাসনাতের হয়ে কাজ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ অবস্থায় সংঘাত-সহিংসতা হতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। এরই মধ্যে সনমান্দি ইউনিয়নের হরিহরদী গ্রামসহ একাধিক জায়গায় লাঙ্গলের পক্ষে প্রচারণার সময় বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এসব ঘটনায় নিরব ভুমিকা পালন করে, কর্মী-সমর্থকদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ উঠেছে কায়সার হাসনাতের বিরুদ্ধেও।

সাধারণ ভোটারদের মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ মতো একটি ও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন বাস্তবায়ন করতে হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে রবিনের মতো চিহ্নিত অপরাধী ও দাগি সন্ত্রাসীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তা নাহলে এইসব অপরাধীদের নিয়ে যে পেশীশক্তির ব্যবহার নৌকার প্রার্থী করছে, তাতে করে সোনারগাঁয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিতে পারে বলে অভিমত তাদের। এখনই সন্ত্রাসীদের লাগাম টানা না গেলে নির্বাচনে এর ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

এরই মধ্যে, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী, সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা অভিযোগ করে বলেছেন, নির্বাচনকে ঘিরে সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়েছে, সোনারঁগায়ে যাদের ভোট নেই, তারাই সাধারণ জনগনকে ভোটকেন্দ্রে যেতে হুমকি দিচ্ছে।

তবে, পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, চিহ্নিত ও দাগি সন্ত্রাসীরা যাতে নির্বাচনকে উপলক্ষ্য করে খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে প্রশাসন। শীঘ্রই চিহ্নিত অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হবে বলেও জানা গেছ। উল্লেখ, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।