
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সদর থানার সভাপতি মাসুদ রানা, ১২নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বাবু, যুবদল নেতা মুন্নাসহ নেতাকর্মীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (০৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ এলাকায় কামাল উদ্দিনের মোড়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বহিস্কৃত একটি গ্রুপের লোকজন এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ গুরুতর আহত টিপু ও তার কর্মী সমর্থকদের।
জানা গেছে, বন্দর উপজেলার তিনগাও এলাকায় সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে একটি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করতে হাজীগঞ্জ-নবীগঞ্জ ঘাট দিয়ে বন্দরের নবীগঞ্জে যান মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু ও তার কর্মী সমর্থকরা। নবীগঞ্জ ঘাট পার হয়ে কামাল উদ্দিনের মোড়ে গেলে একদল দুস্কৃতিকারী তার উপর হামলা চালায়। হামলার একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
সেখানে দেখা যায়, একদল যুবক লাঠি ও বাশ হাতে বেদম প্রহার করছে টিপুকে। এসময় নিজের জীবন বাঁচাতে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে রাস্তায় পড়ে যায় টিপু। তখন হামলাকারীরা তাকে বাশ দিয়ে পিটানো সহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয় এবং লাথি-ঘুষি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে দৌড়ে পালিয়ে একটি বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেই বাড়িতে ঢুকেও টিপুকে মারধর করা হয় বলে জানা গেছে।
সেখান থেকে স্থানীয়রা ও কর্মী-সমর্থকরা টিপুকে উদ্ধার করে প্রথম নারায়ণগঞ্জ-৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল তথা খানপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে আহত অবস্থায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে টিপু জানায়, বহিস্কৃত মুকুল, কাউন্সিলর আশা, সৌরভ ও রাজীবের নেতৃত্বে আমার উপর হামলা চালানো হয়। ওরা আজ আমাকে মেরেই ফেলতো। পরে, সেখান থেকে নগরীর চাষাড়ায় হেলথ রিসোর্ট হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় তাকে। বর্তমানে টিপু সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, টিপুর উপর হামলার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ মিছিল করেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, পরিকল্পিতভাবে হত্যাকান্ড সংঘটিত করার জন্য আতাউর রহমান মুকুল, আবুল কাউছার আশা, সৌরভ ও রাজীবের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে। তাদের সাথে যারা সবাই আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী। তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। নিজের অপকর্মের কারণে আতাউর রহমান মুকুল বহিস্কৃতি হয়েছে। বহিস্কার হওয়ার পরও বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি ও মানুষকে মারধর করছে। তার সাথে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নাই।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার সাথে সাথেই বন্দর থানার ওসি মোস্তফা সাহেবকে আমি ফোন করেছি। কিন্তু তিনি টিপুসহ হামলায় আহতদের বাঁচাতে কোনো পদক্ষেপ নেন নাই। ওসি মোস্তফাসহ যে আওয়ামী প্রশাসন রয়েছে বন্দরে, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রত্যাহারের আহবান জানাচ্ছি। এছাড়া, আগামী ১২ ঘন্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতারের আল্টিমেটামও দেয় সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. আনোয়ার প্রধান। এসময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার হোসেন আনু, ফতেহ মো. রেজা রিপন, মহানগর যুবদলের আহবায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, বিএনপি নেতা শাহীন প্রমুখ।
তবে, হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন মহানগর বিএনপির পদত্যাগী সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও নাসিক ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা এবং বহিস্কৃতি বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুল। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তারা বলেন, টিপু সাহেব স্বপ্নেও আমাকেই দেখেন, এটা আমার সৌভাগ্য না দুর্ভাগ্য তা আমি জানি না। এ হামলার সাথে আমরা কোনোভাবেই জড়িত নই। তবে, যতটুকু শুনেছি, কিছুদিন আগে টিপুর নির্দেশে যুবদল কর্মী সুজন মামলার ভয় দেখিয়ে মোবাইলে নুরুজ্জামান নামে এক লোকের কাছে চাঁদা চাইছে। এটার রেকর্ডিং আছে এবং এটা মিডিয়ায় চলে আসছে। মিডিয়ায় আসার পর থেকেই বিভিন্নভাবে তাদের হেনস্থা করছে, আজকেও ৩/৪ জনের মাথা ফাটাইছে। তারা চিকিৎসা নিচ্ছে। এলাকাবাসী কতক্ষণ সহ্য করবে এগুলা। আজকে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর রোষানলে পড়ে তার সাথে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।