সীমান্তে নাগরিক হত্যায় ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি

18
গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

মাজারসহ সকল ধর্মীয় স্থাপনা ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে গণসংহতি আন্দোলন। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ করেন তারা।

সভাপতির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন বলেন, আমরা আমাদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলতে চাই, ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে, বাংলাদেশের যে পররাষ্ট্রনীতি আছে, তা বদলাতে হবে। আমরা আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে বলতে চাই, ভারতের বিএসএফকে পিঠ নয়, বুক দেখান। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা হাসিনার সন্ত্রাসী বাহিনীকে পিঠ নয়, বুক দেখিয়ে লড়াই করে জিতেছে। ছাত্র-জনতার কাছ থেকে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে শিক্ষা নিতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পাশর্^বর্তী রাষ্ট্র ভারত, যেহেতু প্রতিবেশী পাল্টানো যায় না, তাই অতীতেও আমরা আওয়ামীলীগ সরকারকে বলেছিলাম বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি পাল্টাতে, কিন্তু তারা তা বদলায় নি। ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক ছিলো গোলামীর সম্পর্কতে পরিণত ছিলো। ২০১১ সালের ০৭ জানুয়ারী কিশোরী ফেলানীকে হত্যা করে সারাদিন কাটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হয়। গত ০১ সেপ্টেম্বরও স্বর্ণা দাস বিএসএফ’র গুলিতে নিহত হয়েছে। আইন ও শালিশ কেন্দ্রের একটি পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৫২২ জন নাগরিক সীমান্তে হত্যা হয়েছে। ২০২৩ সালে ৩১ নাগরিককে বিএসএফ গুলি করে মেরেছে। ২০২২ সালে ২৩ জন নাগরিককে বিএসএফ গুলি করে মেরেছে। চলতি ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১৫ জন। এই যে শাসক ও গোলামীর নীতি আমরা গত ৫ আগস্ট ছুড়ে ফেলে দিয়ে এসেছি। হাজারো ছাত্র-জনতা বুকের রক্ত দিয়ে যে গোলামীর নীতি ছুড়ে ফেলে দিয়ে আজকে আমরা নতুন করে স্বপ্ন দেখছি। ছাত্র-জনতার ঐক্য ভাঙ্গতে পারে নি বলেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। দেশ ছেড়ে পালিয়ে তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানান ধরনের ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। আমরা প্রায়ই তার ফোনালাপ শুনতে পাই।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ৩৬০ আউলিয়ার দেশ। এই আউলিয়ার দেশে আমরা মসজিদে-মাজারে-মন্দিরে কোনো জায়গায় হামলা সহ্য করবো না। পরিস্কারভাবে বললে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে যতগুলো মসজিদ, মন্দির ও মাজারে হামলা হয়েছে, কোথাও আমরা আপনাদের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাই নি। কোথাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দেখতে পাই নি। মসজিদ রক্ষার জন্য, মাজার রক্ষার জন্য, মন্দির রক্ষার জন্য যথাযথ দায়িত্ব পালন করেন নি। ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন, ধুলিস্যাৎ করছেন তার জন্য আপনারা দায়ী থাকবেন। আমরা বলতে চাই, যারা মাজারে হামলা করছে, যারা মাজার ধ্বংস করছে তাদেরকে গ্রেফতার করতে হবে। যারা বাংলাদেশের জনগনের ঐক্যকে নষ্ট করছে, তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে, তাদেরকে গ্রেফতারের আওতায় আনতে হবে। সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিক হত্যার প্রতিবাদে ভারতীয় সরকারকে কঠোর চাপ প্রয়োগ করবেন এবং আমরা সমস্ত হত্যার বিচার চাই। মনে রাখবেন, বাংলাদেশে লাখো লাখো ছাত্র-জনতা, তরুনের রক্তে কেনা বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ গোলামীর বাংলাদেশ নয়, এই বাংলাদেশের আপোষের বাংলাদেশ নয়, এই বাংলাদেশ জনতার বাংলাদেশ।

এতে উপস্থিত ছিলেন মহানগরের সমন্বয়ক নিয়ামুর রশিদ বিপ্লব, জেলার নির্বাহী সমন্বয়ক অঞ্জন দাস, নারী সংহতি আন্দোলনের সদস্য সচিব পপি রানী সরকার, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা বিপ্লব, জুয়েল সরকার, সজিব, জেলা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি সুজন সাহাসহ সংগঠনের জেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতাকর্মীবৃন্দ।