মহাসড়কে তিন চাকার বাহনের দাপট, দুর্ঘটনা বাড়ছ

সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও থ্রি-হুইলারের দাপট

6
মহাসড়কে তিন চাকার বাহনের দাপট: বাড়ছে ঝুঁকি, ঝড়ছে তাজা প্রাণ
মহাসড়কে তিন চাকার বাহনের দাপট: বাড়ছে ঝুঁকি, ঝড়ছে তাজা প্রাণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ডে দিন দিন বাড়ছে থ্রি হুইলার, অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা এবং ভ্যান চলাচলের সংখ্যা। যা সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এসব যানবাহন মহাসড়কে চলাচল করে চলেছে, যার ফলে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা বেড়েছে।

যাত্রী অধিকার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারিভাবে এসব যানবাহন মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ হলেও, স্থানীয়দের অবাধ চলাচল ও পুলিশি তৎপরতার অভাবের কারণে দিন দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড অংশে দুর্ঘটনার অর্ধেকই ঘটছে এসব যানবাহনের কারণে।

মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় সিএনজি, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যান অবাধে চলাচল করছে।

মহাসড়কে তিন চাকার বাহনের দাপট: বাড়ছে ঝুঁকি, ঝড়ছে তাজা প্রাণ
মহাসড়কে তিন চাকার বাহনের দাপট: বাড়ছে ঝুঁকি, ঝড়ছে তাজা প্রাণ

এই যানবাহনগুলো হুট করে বাসের সামনে চলে আসায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে এসব যানবাহন নিয়মিত চলাচল করছে।

স্থানীয়রা বলছে, বিগত সময়ে পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের নাম ভাঙ্গিয়ে স্থানীয় শ্রমিক নেতারা এসব যানবাহন থেকে মাসিক চাঁদা আদায় করতো।

প্রতিটি অটোরিকশা থেকে ৫০০ থেকে দেড় হাজার টাকা মাসিক টোকেন বাবদ নেওয়া হতো।

কিছু এলাকায় পুলিশও এসব চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত ছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে।

ফলে, রাজনৈতিক চাপ ও হাইওয়ে পুলিশের সদিচ্ছার অভাবে এসব যানবাহন আটকাতে পারতো না তারা।

মহাসড়কে তিন চাকার বাহনের দাপট: বাড়ছে ঝুঁকি, ঝড়ছে তাজা প্রাণ
মহাসড়কে তিন চাকার বাহনের দাপট: বাড়ছে ঝুঁকি, ঝড়ছে তাজা প্রাণ

তবে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই সেক্টরে এখনো পর্যন্ত নতুন চাঁদাবাজ চক্র সৃষ্টি হয়নি এখনো।

তারপরও পুলিশের নিস্ক্রিয়তার সুযোগে অপেক্ষাকৃত কম গতির এসব বাহনের চলাচল মহাসড়কে আবারও বাড়ছে।

জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১ আগস্ট থেকে দেশের ২২টি মহাসড়কে তিন চাকার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজি, নছিমন, করিমন, ভটভটি চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

তবে, বাস্তবে এসব যানবাহন মহাসড়কে চলাচল করছে এবং পুলিশি তৎপরতা সীমিত।

আইন অমান্য করে এসব যানবাহন চলাচল করছে, যা সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

মহাসড়কে তিন চাকার বাহনের দাপট: বাড়ছে ঝুঁকি, ঝড়ছে তাজা প্রাণ
মহাসড়কে তিন চাকার বাহনের দাপট: বাড়ছে ঝুঁকি, ঝড়ছে তাজা প্রাণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৬০ কিলোমিটার অংশে তিন চাকার বাহনের কারণে দুর্ঘটনা বেড়ে চলেছে। ঝরে যাচ্ছে তাজা প্রাণ।

আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে অভিশপ্ত জীবন পার করছেন অনেকে। কাগজে কলমে মহাসড়কে তিন চাকার বাহন চলাচল নিষিদ্ধ থাকলে বাস্তবে তার উল্টো চিত্র।

তবে, আশার বাণী হলো মহাসড়কে এসব বাহনের বিচরণ রোধে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর সহায়তা নিচ্ছে সরকার।

শৃঙ্খলা ফেরাতে, দুর্ঘটনা কমাতে এবং থ্রি-হুইলার যানবাহন বন্ধ ও গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আওতায় আসছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক।

এই লক্ষ্যে ২৫০ কিলোমিটার বিস্তৃত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয় পাশে ১ হাজার ৪২৭টি সেন্সরযুক্ত ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। ওসব ক্যামেরায় ফুটেজ সংরক্ষণ থাকবে এক মাস পর্যন্ত।

তাছাড়া বৃহত্তর একটি ডাটা সেন্টার, পাঁচটি কন্ট্রোল রুম ও ১৬টি চেকপোস্টের মাধ্যমে হাইওয়ে পুলিশের তত্ত্বাবধানে তা নিয়ন্ত্রিত হবে।

যাত্রী অধিকার ফোরামসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সচেতন মহলের মতে, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

যাত্রী ও চালকদের সচেতন করতে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা যেতে পারে।

এছাড়া, মহাসড়কে চলাচলের জন্য নিরাপদ ও নির্ধারিত যানবাহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা উচিত।

সর্বোপরি, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে থ্রি হুইলার, অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যানের চলাচল একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এসব যানবাহন মহাসড়কে নিয়মিত চলাচল করছে, যা দুর্ঘটনা ও যানজটের অন্যতম কারণ। আইন প্রয়োগে শিথিলতা ও চাঁদাবাজির কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যেতে পারে।

এ বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. সোহেল রানার মোবাইলে কল করা হলে তিনি কল রিসিভ করেন নি।