
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা বিসিক শিল্পাঞ্চল এখন কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন শ্রমিকদের মোবাইল, টাকা-পয়সা ছিনতাই, মারধর ও নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে এই গ্যাং। শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
অপরাধের হটস্পটগুলো
মার্টিনের গলির মাথায় রাসেলের বাড়ির সামনে, রহমান প্লাজার মাঠ ও ভাঙ্গা ক্লাব, বিসিক শিল্প পার্কের মাঠ, কলা বাগানের গলির মুখে ফায়ার সার্ভিসের পাশ্ববর্তী খাালি জায়গা ও ক্রোনী গার্মেন্টসের সামনের মাঠ।
নিরাপত্তাকর্মীর উপর নৃশংস হামলা: মুখে ২৩ সেলাই
সম্প্রতি বিসিক শিল্প নগরীতে এক ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। ছিনতাইকারীদের হামলায় শাহজাহান আলী (৪৫) নামে এক নিরাপত্তাকর্মীর মুখে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ২৩টি সেলাই লাগে। আহত হন তার সহকর্মী সুমন মিয়া (২৫)।
ঘটনার বিবরণ
মঙ্গলবার রাত ৯টা: এমবি নিট ফ্যাশনের অপারেটর জিহাদ আলম ছিনতাইয়ের শিকার হন।
বুধবার রাত ৮:২০: জিহাদ অভিযোগ করতে গেলে ছিনতাইকারী মামুন ইসলাম (বিষু)কে দেখতে পায়।
নিরাপত্তাকর্মীরা মামুনকে আটক করতে গেলে ৫০-৬০ জনের গ্যাং হামলা চালায়।
মামুন ছুরি দিয়ে নিরাপত্তাকর্মী শাহজাহানের মুখে আঘাত করে, আরেক নিরাপত্তাকর্মী সুমনকে চাকু মারে।
স্থানীয়রা এগিয়ে এলে ৪ জনকে আটক করা হয়, কিন্তু মূল হোতা মামুন পালিয়ে যায়।
আটক আসামীদের দ্রুত জামিন: কাদের ষড়যন্ত্র?
এ ঘটনায় আটক করা কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারী চক্রের চার সদস্যকে। এরা হলেন, নাঈম লিমন (২০), রানা (১৮), রিয়াদ বাবু (২০), আরিফ বাবু (১৯)।
তবে, ঘটনার পরদিন তথা ১লা মে, সরকারি ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও আটক ৪ আসামী জামিন পেয়ে যায়, যা ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
ব্যবসায়ীদের প্রতিক্রিয়া
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, মারাত্মক জখম হওয়ার পরও নিরাপত্তাকর্মীরা চারজন ছিনতাইকারীকে আটক করে পুলিশে দেয়। পরের দিন তথা ১লা মে “ছুটির দিনে এদের জামিন করানো হলো। কারা তাদের জামিন করালো? এদের পেছনে কে আছে?”
মদদদাতাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
আদালতের প্রতি তার অনুরোধ , এ ধরনের মামলায় যাচাই-বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হোক।
প্রশাসন আরও কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে এবং ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা: “বিসিকে এই গ্যাং দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসা চালাচ্ছে। প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।”
পুলিশের তদন্ত ও চ্যালেঞ্জ
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ জানিয়েছে, মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারে বিশেষ টিম কাজ করছে।
স্থানীয়দের দাবি: “এই অপরাধীদের দ্রুত বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করুন!”