
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
দলের সুনাম নষ্ট হলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধানের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের হস্তক্ষেপ নিতে বাধ্য হবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্চয় রহমান।
গত ০৭ই আগষ্ট মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে এ বিষয়ে তিনি একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেন।
স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, আমি নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের ১ম সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্চয় রহমান। কিছুদিন ধরে পত্রিকায় বা অনলাইন নিউজে দেখতেছি আমার দলেল সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দুজনই একে অপরকে দোষারোপ করছে। সত্য কোনটা মিথ্যা কোনটা আমি এখনো পুরোপুরি জানিনা। আমি আপনাদের উদ্দেশ্যে (সভাপতি-সম্পাদক) বলতে চাই, আপনাদের জন্য যদি আমার দলে সুনাম নষ্ট হবে তাহলে আম যার মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবকলীগে আসছি, যে আমাকে স্বেচ্ছা সেবকলীগে পোষ্ট দিয়েছে, আমার নেতা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান সাহেবের হস্তক্ষেপ নিতে বাধ্য থাকিব।
সঞ্চয় রহমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসবকলীগ, ১ম সাংগঠনিক সম্পাদক।
দলীয় সুত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের কমিটি গঠনের পর থেকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় কিছুটা দূরত্ব সৃষ্টি হতে থাকে। তবে সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবকলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অন্যান্য অনুষ্ঠান আলাদাভাবে আয়োজন করায় এবং একে অপরকে উদ্দেশ্য করে বক্তব্য রাখায় তাদের মধ্যকার দ্বন্দ এখন চরম আকার ধারণ করেছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সভাপতি জুয়েল হোসেন বলেন, দলের মধ্যে প্রত্যেকেরই নিজ নিজ মতামত প্রকাশ করার অধিকার আছে। তাছাড়া ও (সঞ্চয় রহমান) ছোট মানুষ কি লিখেছে, কেন লিখেছে সেটা ও নিজেই ভালো বলতে পারবে।
সাধারণ সম্পাদকের সাথে দ্বন্দের বিষয়ে তিনি বলেন, কোনো দ্বন্দ নেই। মতপার্থক্য থাকতে পারে।
২৩ নং ওয়ার্ডে সাধারণ সম্পাদককে না রেখে অনুষ্ঠান করা কতটুকু যৌক্তিক এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ঐ প্রোগ্রামের অর্গানাইজার ছিলো ছোট ভাই কাউসার ও মুরুব্বী কামাল বাদশা। উনাদের আমি সেক্রেটারি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছি, উনারা বলেছে বাবা আমি নিজে কথা বলেছি দুলাল (সাধারণ সম্পাদক) থাকবে। কিন্তু কেন যে ও এই অভিযোগ করছে তা আমি জানি না।
এমপি শামীম ওসমানের হস্তক্ষেপ কামনা চান ১ম সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্চয় রহমান, এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক দুলাল প্রধান বলেন, জ্বী ভাই আমিও চাই এমপি সাহেব হস্তক্ষেপ করুক।
২৩ নং ওয়ার্ডের অনুষ্ঠানে কাউসার ও কামাল বাদশা নামে ২জন আপনাকে দাওয়াত দিয়েছেলো, কিন্তু আপনি আসেন নি এমন দাবি সভাপতি জুয়েলের। এ বিষয়ে কি বলবেন জানতে চাইলে দুলাল বলেন, আমি কমিটির সেক্রেটারি। আমাকে কাউসার কেন দাওয়াত দিবে? আর কাউসার কে? ও বিএনপি করে, ওর বাবা আহমদ বিএনপি করে। বিএনপি করে এমন ছেলের দাওয়াতে আমি কেন আসবো? আর দাওয়াত কি যেদিন প্রোগ্রাম সেদিন দেয়া হয়?
তাছাড়া শুধু ২৩ নং ওয়ার্ড না, অন্যান্য ওয়ার্ডগুলোতে যে ও (সভাপতি জুয়েল) প্রোগ্রামগুলো করলো, কমিটির কার সাথে পরামর্শ নিয়ে করেছে? আমি না হয় নিজেকে বাদই দিলাম।
২০ নং ওয়ার্ডে, ২৪ নং ওয়ার্ডে সে প্রোগ্রাম করেছে আমি তো ভালো কেউই জানে না। ২৪ নং ওয়ার্ডে সহ-সভাপতি তানভীর আহমেদ সোহেল থাকে, ক্রীড়া সম্পাদক থাকে। আমার না হয় দোষ আছে, কিন্তু ওদের তো বলতে পারতো। ওরা তো সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদ বহন করে, তাছাড়া ওদের এলাকায় প্রোগ্রাম হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমার একটাই দু:খ। অন্যান্য ওয়ার্ডে করেছো কিছু বলি নাই, কিন্তু আমার ওয়ার্ডে (২৩ নং ওয়ার্ড) এসে যখন বিএনপির লোক দিয়ে প্রোগ্রাম করেছে, তখন তো আমার কিছু বলার থাকে।
দ্বন্দের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার সাথে সভাপতির কোনো মারামারি বা কাটাকাটি, ফাটাফাটি হয়নি। তবে ও যখন এককভাবে প্রোগ্রামগুলো করছে, তখন আমি আর সহ্য করতে পারি নাই।
মহানগরের ওয়ার্ডগুলোর কমিটি কি তাহলে আপনাদের দ্বন্দের কারণে আটকে আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তাকে বলেছিলাম, বন্দরের ৯টি ওয়ার্ডে আমাকে প্রাধান্য দিয়ে সদর ও সিদ্ধিরগঞ্জে তুমি করো, আমার কিছু লোক রেখো। কিন্তু সে যদি প্রতি কমিটির সভাপতি-সেক্রেটারী দিয়ে দেয় তাহলে বাকী থাকে আর কী?
এদিকে তাদের উভয়ের মধ্যকার যে ভুল বোঝাবুঝি বা দ্বন্দ তা শীঘ্রই শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন দুজনেই। দুলাল প্রধান বলেন, আশা করি, আমাদের এমপি শামীম ওসমান মহোদয়ই এ ভুল বোঝাবুঝির শেষ করে দিবেন।