
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
আসন্ন গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন আহমেদের নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (০৮ নভেম্বর) ইউনিয়নের সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই বলেছেন, আমরা রাতের অন্ধকারে ক্ষমতায় যেতে চাই না। যারা চোরাই পথে ক্ষমতায় আসতে চান, তারা ভুলে যান। জনগনের মেন্ডেট নিয়ে, জনগনের ভোট নিয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে।
এখানে আমাদের দলের কেউ কেউ বিরোধীতা করছে, যাদের পদ নাই তাদের সম্পর্কে আমাদের কিছু করার নাই। যাদের পদ আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ এসেছে আমাদের কাছে। যারা পদ-পদবী নিয়ে নৌকার বিরোধীতা করে তারা নেত্রীর বিরোধীতা করে, তারা বঙ্গবন্ধুর বিরোধীতা করে, তারা আমার দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। তাদের সঙ্গে আওয়ামীলীগের কোনো সম্পর্ক নাই। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি, ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে।
একজনতো আমপাতা, কলাপাতা দিয়েছেন। আরে আমপাতা তো মার্কা নাই। কেউ যদি আমপাতা-কলাপাতা দিয়ে নেতাগিরি করেন, চিরতরের জন্য আওয়ামীলীগের দরজা তার জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। পরিস্কার কথা, কোনো খাতির নাই, কোনো ছাড় নাই। পরিস্কার নির্দেশ এসেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার।
আমার দল করে যে নৌকাকে অবমূল্যায়ন করবে, সে তো আমার নেত্রীকে অবমূল্যায়ন করে। নৌকাকে যে মানে না সে আমার নেত্রীকে মানে না, সে আমার আওয়ামীলীগকে মানেনা, সে আমার বঙ্গবন্ধু মানে না, সে আমার মুক্তিযুদ্ধকে মানে না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া ফরজ হয়ে দাড়িয়েছে। আমি ১ দিন সময় দিলাম, আপনারা মেহেরবানী করে মূল ধারায় ফিরে আসেন, যদি না আসেন তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজর আলীকে হাতির সাথে তুলনা করে আবদুল হাই বলেন, আপনার বিরুদ্ধে একটি হাতি দাড়াইছে। শহরের সবচেয়ে উচু বিল্ডিংটা তার। সে মনে করতাছে আমি টাকা দিয়ে সব কিনে ফালামু। টাকা দিলে টাকা নিবেন, অসুবিধা নাই ভোটটা দিবেন নৌকায়। উনার বেশী টাকা হয়ে গিয়েছে, উনার টাকা উদ্বৃত্ত হয়ে গিয়েছে, ঘরে টাকা রাখার জায়গা নাই উনার।
তিনি আরও বলেন, নদীতে যখন জোয়ার আসে, তখন বালির বাধ রক্ষা করা যায় না। ঠিক তেমনি নৌকার জোয়ার এসেছে, ফজর আলীকে রক্ষা করা যাবে না। অনেক জায়গায় বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় আমাদের নৌকার প্রার্থী জয়ী হয়েছেন, আমি ভেবেছিলাম এথানেও তাই হবে। কিন্তু অনেকের ইন্ধনে, অনেকে চাবি দিয়েছেন তাই উনি (ফজর আলী) দাড়িয়ে গিয়েছেন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল বলেছেন, বক্তব্য রাখবেন হাই ভাই, আমি আসলে খুব একটা বক্তব্য কোথাও দেই নাই। আমি শ্লোগানের মানুষ, শ্লোগানে শ্লোগানে আমি তোলারাম কলেজ থেকে, টোকাই থেকে এই জায়গায় আমি বড় হয়েছি।
তারপরও বলছি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান আপনাদের সাথে আছেন, পাশে আছেন। গতকাল রাতে কথা হয়েছে, আজকেও কথা হয়েছে। নৌকাকে জয়ী করার জন্য উনি উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন। নির্বাচনে অনেক বিধি-বিধান আছে, চেয়ারম্যান, এমপি অনেকে আসতে পারেন, অনেকে পারেন না। আমরা যারা রাজনীতির সাথে জড়িত, আমরা যারা দল করি, আমরা ঝাপিয়ে পড়েছি। নৌকার পক্ষে ভোট চাচ্ছি। সাধারণ ভোটাররা যারা অন্য দিকে ছিলেন, আসুন সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকা প্রতীকে জসিম ভাইকে ১১ তারিখে বিপুল ভোটে বিজয়ী করে আনবো ইনশাআল্লাহ। গতবার অনেকে ভোট দেন নাই উনাকে, যার জন্য উনি পাশ করেন নাই। এবার আমরা তার জন্য ভোট চাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে প্রতীক পাওয়ার আগে সাধারণ মানুষের মনে একটা দ্বিধা-দ্বন্দ ছিলো কে পাবে নৌকা প্রতীক পাবে। একেকজন একেকজনের পক্ষে ছিলো, এটা থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই বলে কি জসিম ভাই কারো উপর রাগ করছেন? না উনি কারো উপর রাগ গোস্যা করেন নাই। বরং এই স্টেজে এসে উনি সকলের কাছে মাফ চাইলেন, এটা কতো উদারতার ব্যাপার। জসিম ভাই যদি যোগ্য প্রার্থী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই তাকে একটি একটি করে ভোট দিয়ে জয়ী করবেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, সকলে দোয়া করবেন যাতে ১১ তারিখের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় এবং আল্লাহ যেন আমাদের জয়ী করে আনে। আমি তো রক্তে মাংসে মানুষ, ভু্ল ত্রুটি আমারও হতে পারে, আমি বক্তব্যের শুরুতে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি যদি কোন ভুল করে থাকি তাহলে আমি হাতজোড় করে সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।
তিনি আরও বলেন, আমি সেলিম ওসমান, শামীম ওসমানের সুস্বাস্থ্য কামনা করি। সবাই কষ্ট করে এখানে এসেছেন সবার দোয়া, সমর্থন ও ভোট কামনা করি।
গোগনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল আজিজ মাস্টারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই। প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল।
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সেক্রেটারী এবিএম আজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক এম এ রাসেল, জেলা শ্রমিকলীগের আহবায়ক আব্দুল কাদির, সদস্য সচিব কামাল আহমেদ, সদর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি নাজির মাদবর, গোগনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মজিবুর শিকদার প্রমুখ।