আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিচারের ভয়ে বেগম জিয়াকে বিদেশ যেতে দেয় না সরকার : এড. তৈমুর

24

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

দুইটা কারণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে তাকে যেতে দেয়া হয়না। প্রথমত হতে পারে জেলখানায় তাকে নিশ্চয়ই কোনো অপচিকিৎসা দেয়া হয়েছে, যে চিকিৎসার কারণে তিনি দিন দিন মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েছেন। তাই তিনি যদি বিদেশে যান, বিদেশের চিকিৎসায় যখন এটা ধরা পড়বে, তখন আন্তর্জাাতিক পর্যায়ে এটার বিচার হবে। আরেকটা কারণ হতে পারে, বাংলাদেশ সরকার চায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়া যত তাড়াতাড়ি এ দেশ থেকে বিদায় হবেন, ততো তাড়াতাড়ি তাদের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা যাবে। এছাড়া আর অন্য কোনো কারণ নাই এমনটাই দাবী করেন জেলা বিএনপির আহবায়ক ও বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এড. তৈমূর আলম খন্দকার।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য বিদেশের যেতে না দেয়ার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সোমবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সংলগ্ন রাস্তায় শত শত নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে। এড. তৈমুরের নেতৃত্বে সবাইকে একসাথে নিয়ে মিছিল করার সময় পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশি বাধার কারণে সকলকে নিয়ে সেখানেই বসে পড়েন তৈমুর। পরে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে বক্তব্য রাখেন তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি, দেশের প্রধানমন্ত্রী, দেশের মন্ত্রীরা কিছু থেকে কিছু হলে বিদেশে চলে যায় চিকিৎসার জন্য। কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে যেতে দেয়া হয় না। বাংলাদেশের চিকিৎসা যদি এতোই উন্নত মানের হতো, তাহলে হাজার হাজার লোক, মন্ত্রী-মিনিষ্টার, রাষ্ট্রপতি কেন বাংলাদেশের বাইরে চলে যান চিকিৎসার জন্য।

পাকিস্তানি মেজাজে কথা বলেন আইনমন্ত্রী এমন দাবী করে তৈমুর বলেন, আজকে বন্ধুগণ আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকেন, পাকিস্তান আমলে দেখেছি ভুট্টো জাতিসংঘে দাড়িয়ে ভুট্টো বলেছিলো, পাকিস্তানের শাসনতন্ত্রের বাইরে যেতে পারি না। অনুরূপ ভাষায়, অনুরূপ মেজাজে, অনুরূপ চেহারা নিয়া আনিসুল হক বলেন আমরা আইনের বাইরে যেতে পারি না। আইন কি? এটার ব্যাখ্যা আমরাও জানি। আমি প্রতিদিন বিভিন্ন টেলিভিশনের টক শো তে ব্যাখ্যাগুলো দিচ্ছি। আইনমন্ত্রী সাহেবকে অনুরোধ করছি, আপনি যদি পারেন তাহলে এ ব্যাখ্যা খন্ডন করেন। একটি ক্ষমতা কারো চিরস্থায়ী নয়, একটি ক্ষমতায় আপনেও থাকবেন না। আপনাকেও হাইকোর্টের বারান্দায় জামিনের জন্য আসতে হবে। আপনার চিকিৎসার জন্যও আপনাকে অনুকম্পা চাইতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা কথা দিচ্ছি, আপনার যখন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তখন আপনার মতো অমানবিক আমরা হবো না। আপনার মতো অশোভন আচরণ আমরা করবো না, আপনার দল যে হিংসাত্মক আচরণ করছে তা আমরা করবো না।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি সংবিধানে ১৪৮ ধারা মোতাবেক শপথ নিয়েছেন। আপনে ২ টা পোষ্ট হোল্ড করেন। আপনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী, আপনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী হিসাবে আপনি যা খুশী তা মতামত পোষণ করতে পারেন কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানের ৪১, ৪৮ ধারা মোতাবেক আপনে রাগ-অনুরাগের বশবতী হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। আপনি নিজের মনগড়া কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।

সবশেষে মোনাজাতে দোয়ায় তিনি বলেন, আল্লাহ আপনি এ জাতিকে রক্ষা করেন। এ জাতির মধ্যে যে প্রতিহিংসা চালু হয়েছে, এ জাতির মধ্যে যে ক্ষমতার অপব্যবহার চালু হয়েছে সেটা থেকে আপনি আমাদের রক্ষা করেন। আল্লাহ আপনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জীবন দান করেন, তাকে হায়াৎ দারাজ করেন।

উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগামী প্রতিটি আন্দোলনে আপনারা উপস্থিত থাকবেন, আন্দোলন ইস এ কন্টিনিউয়াস প্রসেস। সেই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আমাদের দাবি এখন আল্লাহর দরবারে আর জনগনের বিবেকের কাছে।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবির সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জাহিদ হাসান রোজেল, রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাদেকুর রহমান, জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শহীদুর রহমান স্বপন, যুগ্ম সম্পাদক রাসেল আহমেদ, জেলা মহিলা দলের আহবায়িকা মায়া চৌধুরী প্রমুখ।