
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
কোভিড-১৯ মোকাবেলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে জেলার হাসপাতালগুলোতে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা ও অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রদান করা হয়।
আজ বুধবার (১২ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ ২’শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজের হাতে এ চিকিৎসা সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন এসময় বলেন, জেলা পরিষদ একটি সেবা মুলক প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছি। কিছুদিন আগে আমরা ডায়াবেটিক হাসপাতালে ৪৭ লক্ষ টাকা দিয়ে কিডনি ডায়ালাইসিসের যন্ত্রপাতি কিনে দিয়েছি। আমরা চাই নারায়ণগঞ্জের মানুষের কাছে জেলা পরিষদ একটা উন্নয়নশীল প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচিত হোক। আমি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সমগ্র জেলায় অনেক কাজ করেছি। রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির সহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতেও অবদান রাখছে জেলা পরিষদ।
তিনি বলেন, বিশেষ করে বেকারত্ব দূরীকরণে আমরা নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ, পুরুষদের মাঝে ভ্যানগাড়ি বিতরণ, পঙ্গুদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ, শিক্ষার্থীদেরকে ইংলিশ স্পোকেন, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন কোর্স করিয়ে সাবলম্বী করতে কাজ করছি। আড়াইহাজারে পাঠাগার, রূপগঞ্জে ডাক বাংলো, সোনারগাঁ জ্যোতিবসু পাঠাগার, তোড়ন, দেওভোগ মাদ্রাসায় নতুন ভবন নির্মাণ, টাইলস বসিয়ে শহরে সৌন্দর্য্যবর্ধনসহ জেলার প্রতিটি থানা-উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, আজকে করোনাকাল, এই করোনাকালে আমরা বিভিন্ন সংকট দেখতে পাচ্ছি। ক্যানুলা, সিলিন্ডার এইসকল যন্ত্রপাতির ঘাটতি দেখতে পাচ্ছি। তাই আমরা মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কিছু হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা ও অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রদান করে আজকে মানুষের পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করেছি। জেলা পরিষদের সামান্য এই অনুদানের কারণে নারায়ণগঞ্জের মানুষ কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন, চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি পাবে।
অনেক কাজ করেছি যা জেলা পরিষদের ইতিহাসে এর আগে কখনো হয়নি উল্লেখ করে আনোয়ার হোসেন বলেন, এর আগেও আমরা করোনার কঠিন সময়ে হাজার হাজার মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রীর উপহার, ত্রাণ বিতরণ, হাসপাতালগুলোসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ করেছি। অনেক কাজ করেছি যা জেলা পরিষদের ইতিহাসে এর আগে কখনো হয়নি। আসলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকলে যা হয় তাই হয়েছে। আগে জেলা পরিষদ চলতো প্রশাসক দিয়ে, জনগনের প্রতি সেই প্রশাসকের দরদ ছিলো কম। আর যারা জনপ্রতিনিধি তারা জনগনের নিকট দায়বদ্ধ, জনগনের প্রতি তাদের দরদ বেশি। এ কারণেই একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমি এই সমস্ত কাজ করে যাচ্ছি। এই অনুদানকৃত সিলিন্ডার ও ক্যানুলা দিয়ে যদি জনগন প্রকৃত সেবা পায় তাহলে জেলা পরিষদ ধন্য হবে।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের প্রশংসা করে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাহেব সর্বদা আমাদের পাশে থেকে বিভিন্ন সময়ে আমাদের সহযোগীতা করেছে। করোনাকালীণ সময়ে আমরা যখন অ্যাম্বুলেন্স সংকটে ভুগছিলাম, তখন চেয়ারম্যান সাহেবের কাছি আমি একটি অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছিলাম। তিনি দীর্ঘ ৫-৬ মাস প্রতিদিন আমাদেরকে একটু অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে রোগীদের সেবা দিতে সহযোগীতা করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন স্বাস্থ্য-সামগ্রী দিয়েছেন।
সবশেষে তিনি আরও কিছু চিকিৎসা যন্ত্রপাতি চাইলে আনোয়ার হোসেন আবেদন করতে বলেন এবং আবেদনের প্রেক্ষিতে যন্ত্রপাতি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এম. এম. মাহমুদুর রহমান, প্রকৌশলী কাঞ্চন কুমার পালিত, আর এম ও এস কে ফরহাদ, ডা. রাশেদা সুলতানা, ডা. নজরুল ইসলাম, ডা. ঝুমা সাহা, ডা. জহিরুল ইসলাম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পি এস কামরুল হাসান প্রমুখ।