
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে জাতীয় পার্টির নাম-গন্ধও থাকবেনা বলে হুমকি দিয়েছেন সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন। শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বারদী ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রস্তুতি সভায় এ হুমকি দেন তিনি।
এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য, জাতীয় প্রেসিডিয়াম মেম্বার, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি লিয়াকত হোসেন খোকার সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় কামাল হোসেন বলছে, ০৭ তারিখ আমাদের দেশে নির্বাচন। আপনেগো কথা দিয়ে যাইতাছি ইনশ্আাল্লাহ, বারদী ইউনিয়নের ২নং সেন্টারে জাতীয় পার্টির নাম গন্ধও থাকবে না, যদি আমরা চেতি। আপনারা ভালো জানেন, বারদী ইউনিয়নের একটা সেন্টার, যেটা ২নং সেন্টারে আমি কামাল যদি ইনশ্আাল্লাহ চেয়ার নিয়ে বসে থাকি তাহলে জাতীয় পার্টির কোনো এজেন্ট খুজেঁ পাওয়া যাবেনা। আমি উল্টা পাল্টা কিছু কইতমা না। কারণ আমি চাই, এজেন্ট বিহীন, এজেন্ট বিহীন নির্বাচনে আপনারা নৌকাকে বিজয়ী করবেন। কারণ আমরা কথা দিছি, ২০ হাজার, ইনশ্আাল্লাহ ২০ হাজার ভোট আমরা কালেকশন করে দিবো। আমি একটি কথাই বলতে চাই, এই বারদীতে আমরা যে পারি, সেটুকু আমি ০৭ তারিখে দেখিয়ে দিবো।
এদিকে, কামাল হোসেনের এমন হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে বারদী ইউনিয়নের ভোটাররা। সরকারী দলের সমর্থকদের এমন কর্মকান্ডে বিব্রত খোদ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, কামাল হোসেনের বাড়ি থেকে এর আগেও ২০১৮ সালে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তাই ০৭ তারিখের নির্বাচনে ভোট দিতে গেলে সংঘাত বা সহিংসতা হতে পারে বলে ধারণা করছে তারা।
তাদের মতে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে কামাল হোসেন ও তার সমর্থক সহ নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের অনেকেই বড় একটি বাধা। তাই প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার বহি:প্রকাশ ও নির্বাচন কমিশনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে কামাল কে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে জানতে কামাল হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের নির্বাচনের দুইদিন আগে এই স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সারের সমর্থক এই কামাল হোসেনের বাড়ি থেকে দুই শতাধিক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাশকতা চালানোর পরিকল্পনায় কামালের বাড়িতে অস্ত্রশস্ত্র মজুদ করা হয়েছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তৎকালীণ সময়ে সোনারগাঁও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বি এম রুহুল আমিন রিমনের নেতৃত্ব অভিযান চালিয়ে বারদী ইউনিয়নের দলরদী গ্রামে অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় কামালের বাড়ি থেকে দুই শতাধিক টেটা, বল্লম ও লাঠিসোটা উদ্ধার করা হয়।