বিগত ১০ বছরে এমপি খোকা’র প্রচেষ্টায় সোনারগাঁয়ে ব্যাপক উন্নয়ন

20

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় সার্বিক উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। গত ১০ বছরে তার নেতৃত্বে এই উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। অবহেলিত জনগোষ্ঠীর কল্যানে তিনি কাজ করেছেন। এ কারণে সাধারণ মানুষের কাছে তিনি আস্থার ঠিকানা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ০৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আবারও তাকেই নির্বাচিত করে উন্নয়ন এগিয়ে নিতে চান এই উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।

লিয়াকত হোসেন খোকার প্রচেষ্টায় ব্রিজ-কালভার্ট, রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কার, ফুটওভার ব্রীজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ভবন নির্মাণ সহ সকল সেক্টরে উন্নয়নের লক্ষ্যে ও জনকল্যানে কাজ করেছেন। এ ছাড়াও কাবিখা, কাবিটা বরাদ্দের মাধ্যমে এইচবিবিকরণ এবং ইটসোলিং রাস্তার উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে বিভিন্ন ইউনিয়নে। আরও অনেক ব্রিজ-কালভার্ট ও রাস্তার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্রীজ-কালভাট:
নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সোনারগাঁয়ের রাস্তা ঘাট, ব্রীজ কালভার্ট নির্মাণসহ পুরোনো রাস্তা সংস্কার কাজ শুরু করেন। গত ১০ বছরে ঐতিহাসিক হরিহরদী, ভাটিবন্দর, রতনপুর, মান্দারপাড়া, চৌরাপাড়া, কাজীপাড়া, প্রেমের বাজার, হামছাদী, বাংলা বাজার, পঞ্চমীঘাট, আনন্দবাজার সেতুসহ মোট ১৬টি ব্রীজ ও ৫৮টি কালভার্ট নির্মাণ করেছেন সংসদ সদস্য। এছাড়া, আমগাঁও ব্রীজের ৭০ ভাগ কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। দৌলরদী ছটাকিয়া দিয়ে নুনেরটেক ব্রীজের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। একইসাথে, কাঁচপুরে নতুন বাস টার্মিনাল এর কাজ চলমান রয়েছে।

 

সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার:
দীর্ঘ দিন ধরে অকেজো, চলাচলের অনুপযোগী রাস্তা উন্নয়ন সহ উপজেলায় শতাধিক রাস্তা নির্মাণ করেন তিনি। বারদী-বিষ্ণাদী-ধন্দী-মাঝের চর রাস্তা, হরিহরদী সড়ক/দড়িকান্দী- বাংলাবাজার সড়ক, অলিপুরা টু শান্তির বাজার, মোগরাপাড়া টু শম্ভুপুরা, কুতুবপুর টু ওমর আলী স্কুল সড়ক, নয়াপুর টু পঞ্চমীঘাট সড়ক, তাজমহল রোড/হামছাদী প্রাইমারী স্কুল রোড, বৈদ্যের বাজার সাতভাইরাপাড়া টু বটতলা রোড/ বরাব-আদমপুর রোড, বঙ্গবন্ধু সড়ক সহ প্রায় ২শতাধিক দৃশ্যমান রাস্তার কাজ সম্পন্ন করেছেন এই সংসদ সদস্য, যা প্রায় ২১৩ কিলোমিটার ও সংস্কার করেছেন প্রায় ২৮০ কিলোমিটার সড়ক। এছাড়া, সংসদ সদস্যের নিজস্ব অর্থায়নে বরাব-আদমপুর রাস্তা, বঙ্গবন্ধু নামে নতুন সড়কসহ প্রায় শতাধিক মাটির রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। একইসাথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁ অংশে ৫টি ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণ সম্পন্ন করার পাশাপাশি ৩টি ইউলুপ এর কাজ চলমান রেখেছেন।

শিক্ষা ক্ষেত্রে:
উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন সহ শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করেছেন তিনি। নিয়মিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনিটরিং করে শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করেছেন। স্কুল কলেজের পাশাপাশি মাদ্রাসা শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করেছেন সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। তিনি নিজে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন করেন।

সোনারগাঁ ডিগ্রী কলেজ, মোগরাপাড়া এইচ জি জি স্মৃতি বিদ্যায়তনকে সরকারি করণ ও অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে গত ১০ বছরে। বৈদ্যের বাজার এন এ এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, কাজী ফজলুল হক উইমেন্ট কলেজ, সোনারগাঁ জি আর মহজমপুর উচ্চ বিদ্যালয়, বারদী রিবর উচ্চ বিদ্যালয়, নেয়াগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়, সোনারগাঁ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও এমপিওভুক্ত মাদ্রাসাসহ প্রায় ৪১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মান সম্পন্ন হয়েছে সংসদ সদস্যর নেতৃত্বে।

দরপত ঠোটালিয়া, কোরবানপুর, আলমদী, নোয়াগাঁ, দামোদরদী, নাকাটিভাঙ্গা, মোগরাপাড়া, রাম গোবিন্দেরগাঁও সহ ১১৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬০টি নতুন ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছেন। আরও ১১টি ভবনের কাজ চলমান এবং ১৭টি ভবনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ, সীমানা প্রাচীর ও মাঠ ভরাটের কাজ সম্পন্ন করেছেন লিয়াকত হোসেন খোকা।

স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে :
সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা, নতুন ভবন নির্মাণ, হাসপাতালের সামনের আরসিসি ঢালাই রাস্তা নির্মাণ ও সৌন্দর্য্যবর্ধন, কাজিরগাঁও, নোয়াগাঁওসহ ৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক বৃদ্ধি করা সহ স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের অভুতপূর্ব অবদান রেখেছেন এই সংসদ সদস্য।

একইসাথে বিদ্যুৎ, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ভবন নির্মাণ, উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ, থীমপার্ক, উপজেলা চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস মেরামত করেন তিনি। প্রায় ১৪৭ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সোনারগাঁ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (সোনারগাঁ জাদুঘর) এর আধুনিকায়নের কাজ চলমান। সোনারগাঁ পৌরসভার ওয়াটার সাপ্লাই প্ল্যান্ড ওয়াসার মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি সুপেয় পানি সরবারহ কাজ চলমান ও জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ৫ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণসহ কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যায়ে উপজেলা পরিষদ ভুমি হস্তান্তর কর (১%) থেকে প্রায় ৩ শতাধিক ইটের সলিং/সিসি, আরসিসি রাস্তার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। দৌলরদী গ্রাম থেকে কুমার চর পর্যন্ত রাস্তায় এইচ বিবি করণ সহ প্রায় ২০ কিলোমিটার হেরিং বন্ড (এইচ বিবি) রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। সাদিপুর, শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। আরও ৩টি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন প্রস্তাবিত। ধন্দী বাজারে আধুনিক গ্রামীণ মার্কেঠ নির্মাণ করা হয়েছে এবং আরও ৫টি আধুনিক গ্রামীণ মার্কেট নির্মাণ প্রস্তাব করা হয়েছে।

বারদী ইউনিয়নের চরাঞ্চলে নুনেরটেকে ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর নীচ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রদান, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি যাদুঘর, বিজয় স্তম্ভ, সনমান্দীতে বঙ্গবন্ধু লাইব্রেরী, সনমান্দী ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধা অফিস, ১৫জন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস নির্মাণ করেন। এছাড়া, শেখ রাসেল স্টেডিয়ামকে খেলার উপযোগী করে গড়ে তোলা, উপজেলা সম্প্রসারিত ৪ তলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ, থীমপার্ক, উপজেলা চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস মেরামত করা হয়েছে।

এছাড়াও, মোগরাপাড়া চৌরাস্তা স্ট্যান্ড থেকে বৈদ্যের বাজার মাছ ঘাট পর্যন্ত রাস্তার কাজ টেন্ডার করা হয়েছে। প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কাঁচপুর থেকে গঙ্গাপুর ও গঙ্গাপুর থেকে নয়াপুর পর্যন্ত রাস্তা দুটির টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। টিপরদীতে ১টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে এবং মেঘনা ও কাঁচপুরে নির্মাণাধীন ২টি ফায়ার সার্ভিসের ৫০ ভাগ নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ ও সংস্কারে গুরুত্বপূণ অবদান রেখেছেন এই সংসদ সদস্য।

নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন তথা সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ জানান, , নানামুখী দৃশ্যমান উন্নয়নের কারণে বর্তমান সংসদ সদস্য সোনারঁগায়ের উন্নয়নের রূপকার এ আসন থেকে আবারও লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

তারা আরও বলেন, সরকারের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম তদারকি করে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন নিশ্চিত করেছেন জাপার প্রেসিডিয়াম মেম্বার লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি। সংসদ সদস্যর নেতৃত্বে সরকারী বরাদ্দ সুষ্ঠুভাবে বন্টন করে উন্নয়ন নিশ্চিত হয়েছে। এতে করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌছে গেছে উন্নয়নের সুফল। সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, মাদকসহ সামাজিক অপরাধ নির্মূল করতে তিনি কাজ করেছেন। উন্নয়ন এগিয়ে নেয়াসহ শান্তি প্রতিষ্ঠায় তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ০৭ জানুয়ারির নির্বাচনে এই উপজেলার উন্নয়ন অব্যহত রাখতে লিয়াকত হোসেন খোকা এমপির বিকল্প নাই।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল মনে করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রচেষ্টায় সম্পন্ন হওয়া বিভিন্ন কাজের মূল্যায়ন করেই সোনারগাঁবাসী আবারও সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাকেই আগামী ০৭ জানুয়ারির নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকে জয়যুক্ত করবে।

জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সহযোগিতায় সোনারগাঁকে আমি শান্তি, শৃংখলা ও উন্নয়নের উপজেলায় রূপান্তর করেছি, নির্বাচিত হলে সামনের দিকে আরও উন্নয়ন করা হবে। জনগনের কাছে দেয়া সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বিগত ১০ বছর আমি নিরলস পরিশ্রম করেছি। বিনিময়ে জনগনের অফুরন্ত ভালোবাসা পেয়েছি। যা আমার জীবনের অন্যতম বড় পাওয়া। আগামীতে নির্বাচিত হলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে এ উপজেলাকে আরও মানসম্মত হিসেবে গড়ে তুলবো।

তিনি আরও বলেন, আগামী পাঁচ বছরে আরও উন্নয়ন করে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করব। সোনারগাঁয়ের জনগণ ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে আমাকে পুনরায় নির্বাচিত করবে এবং আমি বাকি জীবন সোনারগাঁবাসীর উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাই।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি লিয়াকত হোসেন খোকা। ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে রাজণৈতিক অঙ্গনে পদার্পন করেন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বেড়ে উঠা খোকা। সাবেক সফল রাষ্ট্রনায়ক পল্লীবন্ধু এরশাদের একান্ত আস্থাভাজন ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয়। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু এরশাদ নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে তাকে লাঙ্গল প্রতীকে মনোনয়ন প্রদান করেন। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এমপি নির্বাচিত হয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ শুরু করেন। এলাকার সার্বিক উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করার কারনে ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কে হারিয়ে আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন লিয়াকত হোসেন খোকা। ২য় মেয়াদে এমপি নির্বাচিত হয়ে পুনরায় উন্নয়ন কাজ এগিয়ে নিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।