অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা এবং সচিবদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।
বর্তমান উপদেষ্টারা কার সুপারিশে নিয়োগ পেয়েছেন, সেই তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশের জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি ।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের ওপর প্রতিষ্ঠিত এই সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে সেই ত্যাগের কোনো প্রতিফলন নেই এবং দেশে এখনও ভয়মুক্ত পরিবেশে কথা বলার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
উপদেষ্টাদের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন
সামান্তা শারমিন বলেন, “এই মুহূর্তে উপদেষ্টা যারা আছেন, তারা কার সুপারিশে এখানে এসেছেন, এই সুপারিশগুলো উন্মুক্ত করা হোক।”
তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে একজন উপদেষ্টার বডি ল্যাঙ্গুয়েজেও আর এটা নাই যে, কতজনের লাশের ওপর দিয়ে, বডির ওপর দিয়ে, দেহের ওপর দিয়ে এই সরকারটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
তার মতে, ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই পরিবর্তনে যারা সরকারকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে সেই ত্যাগের গভীরতা ও সম্মান অনুপস্থিত।
‘সচিবগুলো তো আগেরই’: আমলাতন্ত্রের সমালোচনা
সরকারের সচিব পর্যায়ে নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সামান্তা। তিনি বলেন, “আর সচিবগুলো তো আগের। নতুন করে যারা এসেছে, তারা আগে কাজ করেছে। তারা বলে আমরা বৈষম্যের শিকার সচিব।”
তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে নতুন নিয়োগ পাওয়া সচিবরাও কার সুপারিশে এসেছেন, সেই তালিকা প্রকাশের দাবি জানান।
‘এখনও অনেক কথা বলতে পারছি না’: নতুন গণঅভ্যুত্থানের হুঁশিয়ারি
দেশে এখনও স্বাধীনভাবে কথা বলার পরিবেশ তৈরি হয়নি দাবি করেন সামান্তা শারমিন।
তিনি বলেন, “এখনও যদি আমরা অনেক কথা বলতে না পারি, এটার ফল আমরা কিছুদিন পরে দেখব।”
শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদের শাসনামলের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সেই সময় বুদ্ধিজীবীদের অতিরিক্ত সাবধানী মনোভাবের কারণে ‘বিকল্প নেই’ বলে একটি ন্যারেটিভ তৈরি হয়েছিল।
তিনি সতর্ক করে বলেন, “আমরা যদি এখনও সাবধানে কথা বলি, তাহলে আরেকটা গণঅভ্যুত্থান হবে। আরও কিছু মরদেহ আসবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “যদি এই দেশটার আমূল পরিবর্তন না হয়, তাহলে এই ধরনের গণঅভ্যুত্থান আপনারা আরও দেখবেন।
যদি আমরা বেঁচে থাকি তাহলে আমরা আবার দেখব।”
