
নারায়ণগঞ্জ সমাচার:
হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুল হক কান্ডে উপজেলা আওয়ামীলীগের এক নেতার দায়ের করা মামলায় উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি গ্রেফতার হওয়ায় ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন নারায়ণগঞ্জ জাতীয় পার্টি। তারা এ ঘটনাকে মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে গ্রেফতার হওয়া আব্দুর রউফের মুক্তি সহ মামলায় আসামী করা অন্যান্য নেতাকর্মীদের নাম প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এ বিষয়ে কথা হলে জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও বন্দর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু বলেন, আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক হিসাবে আমি বলতে চাই, আমাদের কোনো নেতাকর্মী ঐ ঘটনায় জড়িত ছিলো না। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ ঘটনায় জাতীয় পার্টিকে জড়ানো হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যেই বিষয়টি কেন্দ্রে অবহিত করেছি। কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত দিবে সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা ব্যবস্থা নিবো।
যাদের নামে মামলা হয়েছে অনতিবিলম্বে তাদের নাম প্রত্যাহার সহ গ্রেফতার উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আব্দুর রউফের মুক্তিও দাবি করেন তিনি। অন্যথায় কাউকে কোনো ছাড় না দেয়ারও হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন তিনি।
জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব ও জামপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ হানিফ বলেন, আমি এ ঘটনার বিষয়ে শুনেছি তবে বিস্তারিত কিছুই জানিনা তাই কিছু বলতে পারছিনা। তাছাড়া এ হামলা বা মামলার বিষয়ে উপজেলা জাতীয় পাটির সভাপতি বা অন্য কেউ আমাকে কিছুই জানায় নি। তাই আমি জেনে আপনাকে বলতে পারবো।
মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক আকরাম আলী শাহীন বলেন, আমরা একটি দল করি। আমাদের দলের নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছে অবশ্যই আমাদের খারাপ লাগবে। আমরা জাতীয় পার্টি ঐদিন হেফাজতের ঘটনায় সমর্থন দেই নাই। তাহলে আমাদের জাপা নেতাকর্মীরা জড়িত বলে আমার তো মনে হয় না। তারপরও প্রকৃতভাবে জাপার কেউ জড়িত কিনা আমি জানি না, যদি কোনো প্রমাণ থাকে তাহলে সরকার আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
তবে যদি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বা মিথ্যাভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে থাকে তাহলে আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। কেননা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রকৃত অর্থে সবচেয়ে বড় বন্ধু জাতীয় পার্টি। আজ থেকে নয় সেই ৯৬ সাল থেকেই আমরা আওয়ামীলীগের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমরা সবসময় আওয়ামীলীগের জন্য ত্যাগ করেই আসছি। বিনিময়ে কিছুই পাই নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম ওসমান প্রশ্ন শোনার পর বলেন, রাত ১০ টায় আমি এ ধরনের প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারবো না। প্লিজ আমাকে বিরক্ত করবেন না।
একই বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কল রিসিভ করেন নি নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন তথা সোনারগাঁ এলাকার সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা।
উল্লেখ্য, সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাও: মামুনুল হকের নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রয়্যাল রিসোর্ট, উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয় এবং যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতার বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসকল ঘটনা ও সহিংসতার জেরে পুলিশ বাদী হয়ে ২টি ও ক্ষতিগ্রস্থরা বাদি হয়ে ৫ টি মামলা দায়ের করে। এর মধ্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক নাসির উদ্দিনের দায়ের করা মামলায় উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।