চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম’র গণসংযোগ রূপ নিলো জনসভায়

37

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন উপলক্ষ্যে নিয়মিতভাবেই গণসংযোগ ও ভোট প্রার্থনা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সায়েম আহমেদ। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার বিকেল থেকে শুরু হয় তার ভোট প্রার্থণা ও গণসংযোগ। সায়েম আহমেদের আজকের গণসংযোগে ধনী-গরিব, যুবক-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষ এলাকার সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ উপস্থিত হন। ফলে আজকের গণসংযোগ অনেকটা জনসভায় পরিণত হয়।

স্থানীয়রা জানায়, দুইজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর কারণে বারবার ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হন আলীরটেক ইউনিয়নবাসী। অদৃশ্য শক্তির ইশারায় দুজন মিলে সমঝোতা করে পালাবদল করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবারও সেই অবস্থা হতে চলেছিলো। তবে, দীর্ঘ সময়ের প্রচলিত অসঙ্গতিপূর্ণ এ রীতি ভেঙ্গে ভোটাধিকার প্রয়োগের স্বার্থে জনগনের জন্য ইউনিয়নটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন উদীয়মান যুবক, সমাজ সেবক সায়েম আহমেদ।

এদিকে, গণসংযোগ শেষে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে সায়েম আহমেদ বলেন, যিনি নৌকার প্রার্থী হয়েছেন আসলে তিনি নৌকার প্রার্থী ছিলেন না। আমাদের বর্তমান চেয়ারম্যান মতিউর রহমান ছিলেন নৌকার প্রার্থী। যে কোনো কারণে, অদৃশ্য শক্তির ইশারায় মনোনয়ন জমা দেয়ার ঠিক ২ দিন আগে উনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। উনি আওয়ামীলীগের কেউ না। উনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কোনো পদ-পদবীতে নাই। তারপরও উনি নৌকা প্রতীক পেয়েছেন, উনি উনার নির্বাচন করবেন এতে আমাদের কোনো সমস্যা নাই। আমি আওয়ামীলীগের একজন কর্মী।

তিনি বলেন, এই এলাকায় যারা ৪০ বছর ধরে আওয়ামীলীগ করেন তারা আমার পাশে আছে। কিন্তু দু:খের বিষয় আমরা নৌকা প্রতীক পাই নাই। আমাদের এলাকার মানুষের দাবী, ৪৫ বছর যাবৎ আমাদের কোনো চেয়ারম্যান নাই। তাদের দাবী আমাদের এলাকার একজন প্রার্থী হউক, আমাদের উন্নয়নে অবদান রাখুক। আমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করুক, তাই আমি তাদের চাওয়া-পাওয়াকে পূরণ করার জন্য প্রার্থী হয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমি সকলের কাছে আবেদন করবো, আপনারা নির্বাচনকে নিয়ে কেউ কোনো ঝগড়া-ঝাটি করবেন না। আপনাদের ভোটাধিকার আপনারা প্রয়োগ করবেন। আমি এলাকায় ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি, এটাই আমাদের প্রথম জয় হয়েছে।

নেতাকর্মীদের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে সায়েম আহমেদ বলেন, উনি (জাকির হোসেন) অনেক টাকার মালিক, কিভাবে মালিক হয়েছেন তা আমি জানি না। সিনিয়র ব্যক্তিরা ভালো জানেন। উনি প্রভাব বিস্তার করছেন, বিভিন্ন এলাকায় আমার কর্মীদেরকে হুমকি দিচ্ছেন। আমাকে একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেছেন, আমি সেদিন একটা বিয়ের দাওয়াতে ছিলাম। আমাকে, আমার বৃদ্ধ বাবাকে, আমার ভাইসহ আমার নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। সকলের দোয়ায় আমরা জামিন পেয়েছি।

নির্বাচিত হলে কি কি করবেন তা উল্লেখ করে সায়েম বলেন, আমি নির্বাচিত হলে কি করবো সে বিষয়ে একটি ইশতেহার করেছি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে আমি যদি নির্বাচিত হই তাহলে সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ওয়ার্ড পঞ্চায়েত করবো। যাতে ইউনিয়নে কোনো মাদক, সন্ত্রাস না থাকে সেই ব্যবস্থা করবো। আমার এলাকার প্রতিটি রাস্তাকে প্রশস্ত করবো, আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে যুগোপযোগী উন্নয়ন করা হবে।

আব্দুল্লাহপুর দিয়ে একটি ব্রীজ করবো, ধলেশ্বরী নদী দিয়ে ব্রীজ হবে, প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ করবো, একটি মিনি স্টেডিয়াম করবো, প্রতিটি প্রাইমারী স্কুলকে আধুনিকায়ন করবো, স্কুলের শিক্ষার্থীদের প্রত্যেককে বিনামূল্যে ড্রেস দিবো। অন্তত পক্ষে ৩০ বেডের একটি সরকারি হাসপাতাল করবো।

বেকার ছেলেদের জন্য টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট বা টেকনিক্যাল কলেজ করবো। আলীরটেকে দুইটা হাইস্কুল আছে। মুক্তারকান্দি স্কুলের অবস্থা কিছুটা ভালো, কিন্তু অপর স্কুলটির অবস্থা খুব একটা ভালো না। কারণ ভালো শিক্ষক নাই, ভালো পরিচালনা কমিটি নাই। আমি জয়ী হলে স্কুলটিকে আধুনিকায়ন করবো। ডিক্রিরচরেও কোনো উন্নয়ন হয় নাই, আমি সর্বস্তরের উন্নয়ন করবো।

আসলে আগে যারা চেয়ারম্যান হয়েছেন বা যারা হতে চাচ্ছেন তারা কেউ মানুষের উন্নয়ন চায় না। তাদের একটা পরিচিতি দরকার, তাদের একটা ক্ষমতা দরকার, তাদের একটা চেয়ার দরকার। তাই তারা অনেক অর্থের বিনিময়ে, উপর মহলে বিভিন্ন টাকা দিয়ে তারা আজ নৌকার প্রার্থী। যারা জামাত করে, হেফাজত করে তারাও এখন নৌকার প্রার্থী।