অপকর্ম দেখে ফেলেছি তাই চোখ তোলার হুমকি

307

নারায়ণগঞ্জ সমাচার:

চোখ তুলে ফেলার হুমকির জবাব দিয়েছেন ১৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না। জবাবে মুন্না বলেন, গত শুক্রবার বা শনিবারে হবে বক্তব্য শুনলাম, তিনি (কবির হোসাইন) বলেছেন আমার চোখ খুলে ফেলবেন। আমি ভেবে পাই না, এ কথাটার মানে টা কি? আমার কাছে মনে হলো যে, উনি গত পাঁচ বছরের যত অপকর্ম করেছেন, সব কি আমি দেখে ফেলেছি। ছালা চুরি থেকে শুর করে, গম চুরি, যত অপকর্ম আছে হয়তো আমি দেখে ফেলেছি, দেখে ফেলেছি ময়লা আবর্জনার ভাগাড়, রাতের অন্ধকারের যত খারাপ সব দেখে ফেলেছি। আর নয় তো কোনো কারণ দেখি না। উনি প্রার্থী, আমি প্রার্থী চোখ খুলে ফেলবে কেনো? আমি তো কোনো কারণ খুঁজে পাই না।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ১৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার চোখ তুলে ফেলার হুমকি দেন বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসাইন। এ হুমকির প্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এক উঠান বৈঠকে কামরুল হাসান মুন্না এ জবাব দেন।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৮ নং ওয়ার্ডের শহীদনগর স্টেডিয়াম এলাকায় এ উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় মুন্না বলেন, ঠিক আছে আমার চোখ খুলবেন। পুরো ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে না, শুধু এই শহীদ নগরেই আমার মনে হয় ৫০ হাজার চোখ আছে, কতো চোখ খুলবেন আপনে। কার কার চোখ খুলবেন, কার কার কান বন্ধ করবেন? আবার নাকি কবে বলে ফেলে, আমার কানে হয়তো গরম পানি ঢালবে যাতে কোনো কিছু না শুনি। কতো চোখ-কান বন্ধ করবেন তিনি (কাউন্সিলর কবির) মানুষের চোখ খোলা, মানুষ সব দেখে, সব বুঝে। আমাকে বাড়ি ঘর থেকে বের হতে দিবেন না তিনি, ঠিক আছে দিয়েন না। আপনি যদি সবকিছু নির্বিঘ্নে করতে চান করেন, জনগন যদি আপনাকে মেনে নেয়, তাহলে আমিও মেনে নিবো।

তিনি আরও বলেন, অলিতে-গলিতে কমিশনার বানিয়েছেন, ভালো কথা। এই গলিতে কমিশনার, ঐ গলিতে কমিশনার, এই পাড়ে কমিশনার, আলামিন নগর কমিশনার। কউ নলুয়া পাড়া তো কমিশনার বানাতে পারেন নাই, নলুয়া পাড়ার মানুষ আপনাদেরকে চিনে, আপনাদের বংশ সম্বন্ধে জানে। আমার সম্বন্ধেও মানুষ জানে।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, স্যাটেলমেন্ট, গ্যাস সমস্যা, পানির ব্যবস্থা এই ৩টি বিষয়ে কি করলেন গত পাঁচ বছরে। একটা কাগজ দেখান তো, যে এই পাঁচ বছরে এই ৩টি বিষয়ে একটা আবেদন করছেন। স্যাটেলমেন্ট হইলে অনেকে বাড়ি ঘর উন্নয়ন করতে পারবেন, ব্যাংকের ঋণ পাবেন, রাজউকের প্ল্যান পাবেন, সবকিছু করা যাবে। এখন হয়তো করা যায় না। কিন্তু এক ময়লার ভাগাড়ে আমাদের এ অবস্থায় নিয়ে আসছে।

তিনি আরও বলেন, কেন মেয়রকে বলতে পারেন না, আমরা ময়লা নেবো না। কেন ২৭টি ওয়ার্ডের ময়লা আমাদের এখানে আসবে? যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নেই যে আপনার কথা সত্য, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ময়লা ফেলা হয়। তাহলে ডিসি সাহেব আপনাকে ময়লা দিলো, আর আপনি গত ৫ বছরে ডিসি সাহেবের কাছ থেকে এলাকার স্যাটেলমেন্টটা কেন আনতে পারলেন না?

তার আপন ভাইকে একদিন দেখতে যায় নাই উল্লেখ করে মুন্না বলেন, মানুষকে জানাযা দেয়া নি:সন্দেহে সোয়াবের কাজ। তার আপন ভাই ৩দিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন একটা দিনও দেখতে যায় নাই। দ্বিতীয় দিন সে জানে তার ভাইয়ের অবস্থা খুব বেশী খারাপ, আল্লাহ হয়তো তাকে নিয়ে যেতে পারেন। এটা জেনেও সে তাকে দেখতে যায় নাই, এখন মানুষ মরার আগে আইসা বসে থাকে কখন মরবে, কখন জানাযা দিবো ভাবটা এমন হয়ে গেছে।

আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি যদি নির্বাচিত হই তাহলে আলামিন নগর ও শহীদনগর নিয়ে প্রথমে কাজ করবো। দুইটা কাজ স্যাটেলমেন্ট এবং ময়লার ব্যবস্থা দিয়ে আমার কাজ শুরু করবো। ২৪ ঘন্টা সময় নিবো ময়লার ব্যবস্থা করতে, শুধু ২৪ ঘন্টা।